নারী আসামিকে নির্যাতন: উজিরপুর থানার ওসি-পরিদর্শক প্রত্যাহার
৫ জুলাই ২০২১ ১৯:২৭
বরিশাল: হত্যা মামলার এক নারী (৩০) আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলামকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার (৫ জুলাই) বরিশাল রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম আক্তারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিআইজি জানান, উজিরপুর থানার পরিদর্শকের (তদন্ত) বিরুদ্ধে নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন থানার ওসি। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ জুন বাসুদেবের ভাই বরুণ চক্রবর্তী উজিরপুর মডেল থানায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। মামলায় ওই নারীসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই নারীর সঙ্গে বাসুদেবের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন বরুণ চক্রবর্তী।
মামলা দায়েরের পর ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে উপস্থিত করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। গত ২৯ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলি আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালতে ওই নারীকে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান বিচারক। এসময় পুলিশের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন ওই নারী। আদালত একজন নারী কনস্টেবলকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পান। এরপর আদালত তার জবানবন্দি নেন। পাশাপাশি আদালত তার যথাযথ চিকিৎসা এবং নির্যাতনের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে হাসপাতাল পরিচালক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, যাতে আঘাতের চিহ্নের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
আদালতে ওই নারী আসামি অভিযোগ করেন, ২৯ জুন রিমান্ডে নেওয়ার পর তাকে মারধর না করা হলেও পরদিন (৩০ জুন) সকালে তাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কক্ষে পাঠানো হয়। সেখানে তার ওপর যৌন নিপীড়ন চালানো হয়। এরপর এক নারী পুলিশ সদস্যকে ডেকে নিয়ে তাকে আবার লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই তাকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে পেটালে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় দেখতে পান।
তবে এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর
আসামিকে নির্যাতন উজিরপুর থানা ওসি প্রত্যাহার পুলিশ পরিদর্শক প্রত্যাহার