ভ্রাম্যমাণ ইয়াবা সরবরাহকারী টিকটক হৃদয়ের সহযোগীসহ গ্রেফতার ৫
৫ জুলাই ২০২১ ২০:৫৩
ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিলে বেড়াতে আসা প্রেমিক যুগলদের ব্ল্যাকমেইলকারী টিকটক হৃদয়ের অন্যতম সহযোগী অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিককে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। একইসঙ্গে অনিকের চার সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, পাঁচটি ধারোলো অস্ত্র এবং তিনশ পিস ইয়াবা উদ্ধার জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া অন্য আসামিরা হলেন শহিদুল ইসলাম এ্যাম্পুল, আবির আহমেদ রাকিব, সোহাগ হোসেন আরিফ ও মোহাম্মদ হিরো।
সোমবার (৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাকমেইলের শিকার এক যুগলের অভিযোগ পেয়ে র্যাবের গোয়েন্দা দল মাঠে নামে। র্যাব জানতে পারে, অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক কিশোর অবস্থাতেই অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়ি পড়ে। রাজধানীর মগবাজার, হাতিরঝিল এলাকায় ছিল তার রাজত্ব। মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই সবকিছুতেই ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। ২০-২৫ জন সদস্য নিয়ে তার অপরাধ জগত চলছিল। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নয়টি মামলা। এ ছাড়া ভারতে বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে ছিল তার সখ্য।’
র্যাব জানতে পারে, করোনাকালে অনিক বাড়ি বাড়ি ইয়াবা সরবরাহ করে আসছিল। এর বাইরে দৃষ্টিনন্দন এলাকা খ্যাত রাজধানীর হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগলদের ব্ল্যাকমেইল করতো তার সহযোগীরা। মূলত তার মদতেই এ সব কাজ করা হতো।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘সন্ত্রাসী ও টিকটক হৃদয়ের অন্যতম সহযোগী হিরো অনিককে ধরতে বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হিরো অনিক বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন এবং বিভিন্নভাবে ছাড়া পেয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। লকডাউনকে পুঁজি করে মাদক পরিবহন করছিলেন। বিশেষ করে ইয়াবা বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করে আসছিল।’
কমান্ডার মঈন বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, অনিক হাসান ওরফে হিরো অনিক মগবাজার হাতিরঝিল ও তদসংলগ্ন এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা। বর্তমানে তার নামে হত্যা, মাদক ও অস্ত্র, ডাকাতিসহ নয়টি মামলা রয়েছে। তার গ্রুপের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০-২৫ জন। সেই কিশোর অবস্থায় থেকেই তিনি অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে সংঘবদ্ধ দল গড়ে তোলেন। অনিক ২০১৬ সালে আলোচিত ‘আরিফ হত্যা’ মামলার মাধ্যমে পরিচিতি পান।’
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘অনিক টিকটক হৃদয়কে টিকটক গ্রুপের নেশা ও আড্ডার জন্য মাদক সরবরাহ করতেন। তিনি মাদক সিন্ডিকেট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার অন্য চার আসামি তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। তাদের কাছ থেকে মাদক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দা অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা তার রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাইনি। তবে এই সংঘবদ্ধ দল মগবাজার, মধুবাগ, মিরবাগ, নতুন বাজার পেয়ারাবাগ, চেয়ারম্যান গলি, আমবাগান ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার মাদক সিন্ডিকেট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছিল।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে