চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ লাইটার জেটির একটি চালু করল কেএসআরএম
৮ জুলাই ২০২১ ১৯:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার অনুমতি দেওয়া চট্টগ্রাম বন্দরের একটি লাইটার জেটি চালু করা হয়েছে। ইজারাদার প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেড এই জেটি চালু করেছে। কেএসআরএম জানিয়েছে, এই জেটি দিয়ে তাদের মালামাল জাহাজীকরণ ও খালাস করা হবে। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এই জেটি ব্যবহার করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বেলা ১২টায় নগরীর সদরঘাটে আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের চার নম্বর লাইটার জেটির কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় সেখানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ২০১৩ সালে সদরঘাটে চারটি লাইটারেজ জেটি নির্মাণ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। গতিশীলতা আনতে সেগুলো বেসরকারি খাতে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চারটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— কেএসআরএম, রুবি ফুড, বিএসআরএম এবং একেএস।
গত ৪ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এসব লাইটার জেটি পরিদর্শন করে চালুর জন্য ইজারাদারদের তাগাদা দেন। এরপর কেএসআরএমই তাদের পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া জেটি চালু করতে সক্ষম হলো।
লাইটার জেটি চালু উপলক্ষে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে কেএসআরএম’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারওয়ার জাহান রোকন বলেন, ‘এই জেটি দিয়ে আমাদের নিজস্ব পণ্য লোড-আনলোড করা হবে। প্রয়োজনে ভাড়ার মাধ্যমে অন্য প্রতিষ্ঠানের মালামালও লোড-আনলোড করা হবে। তবে তা নির্ভর করবে আমাদের পণ্য বন্দরে থাকা না থাকার উপর। মনে হয় না এর প্রয়োজন হবে। কারণ পুরো বছরজুড়েই আমাদের নিজস্ব পণ্য আনা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান থাকে।’
কেএসআরএম’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, ‘লাইটার জেটি চালুর মাধ্যমে কেএসআরএম ব্যবসায়িকভাবে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। পাশাপাশি বেড়েছে স্বনির্ভরতা ও সক্ষমতা। সদরঘাট ৪ নম্বর জেটি পুরোপুরি পরিচালিত হবে কেএসআরএমের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) থেকে নিজস্ব লাইটারে জেটিতে এনে খালাস করা হবে পণ্য। আমরা আশা করছি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জেটি সংক্রান্ত বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নেবে। এতে করে আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে পারব অনেক গুণ।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘লাইটার জেটি চালুর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সম্প্রসারণ হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের। বিশেষ করে এসব জেটি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আমাদের বিশ্বাস এতে করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আরও বেশি আগ্রহী হবেন। এ ছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ ইজারাদারদের জেটি পরিচালনায় বিদ্যমান সমস্যা নিরসনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অচিরেই সব সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সিনিয়র হাইড্রোগ্রাফার নাসির উদ্দিন, ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) মো. সাইফুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল হাসান চৌধুরী, কেএসআরএম’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক করিম উদ্দিন, পরিচালক (প্ল্যান্ট) অবসরপ্রাপ্ত কমোডর শামসুল কবির, মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন গোলাম মোস্তফা, ক্যাপ্টেন আনোয়ারুল হক, প্রধান প্রকৌশলী গোলাম মর্তুজা, এজিএম মো. মুবিমুর রহমান চৌধুরী।
সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ