Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সীমান্তবর্তী জেলায় নেই চামড়া কেনার প্রস্তুতি, পাচারের শঙ্কা

মো. শামীম কাদির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুলাই ২০২১ ০৮:১৯

জয়পুরহাট: ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় আসন্ন কোরবানির ঈদে চামড়া কেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জয়পুরহাট জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা কিনতে না পারলে চামড়া চোরাকারবারির হাতে চলে যাবে। দেশের কোটি কোটি টাকার চামড়া পাচার হয়ে যাবে ভারতে। তাই এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি চামড়া ব্যাবসায়ীদের।

জানা যায়, প্রতিবছর কোরবানির ঈদে জয়পুরহাটের আড়তগুলো থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার পশুর চামড়া ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। তবে এ বছর জেলার চামড়ার আড়তগুলোতে নেই কোনো প্রস্তুতি। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার পাশাপাশি বাজার এমনিতেই লোকসানে, তার ওপর ট্যানারি মালিকদের প্রায় ১২ কোটি টাকার বাকি দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক চামড়া ব্যবসায়ী। এ অবস্থায় চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন চামড়া মালিক সমিতি।

বিজ্ঞাপন

জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগর, আমতলী, পাঁচবিবি উপজেলার রেলগেট, আক্কেলপুর উপজেলার হাজিপাড়া এলাকায় চামড়ার আড়তগুলোতে প্রতি বছরের মতো এবার নেই কোনো প্রস্তুতি।

আড়তের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকেরা গত কয়েক বছরের কোটি কোটি পাওনা টাকা এখনও পরিশোধ করেনি। এছাড়া প্রতিবছর ট্যানারি মালিকদের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে চামড়া কেনায় বিপাকে পড়েছেন মূল ব্যবসায়ীরা।

সীমান্ত জেলা হওয়ায় চামড়া পাচারের আশঙ্কাও থাকে এখানে। সেইসঙ্গে চামড়ার প্রধান কাঁচামাল লবণের দাম এবং শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই বকেয়া টাকা পরিশোধে ট্যানারি মালিকরা যেন উদ্যোগ নেন ও সেইসঙ্গে ব্যাংকগুলোও যেন সহজ শর্তে লোন দেয়, এ বিষয়ে সরকারকে দৃষ্টিও কামনা করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

জয়পুরহাটের চামড়া ব্যবসায়ী শাহিন আকতার জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা আড়তগুলো প্রস্তুত রেখেছেন। তবে ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা টাকা না পাওয়ায় তার বিপাকে রয়েছেন চামড়া কেনা নিয়ে। লোন পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংক নতুন করে লোন দিচ্ছে না। ফলে আসন্ন ঈদে নতুন করে চামড়া কেনা মুশকিল হয়ে পড়বে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, ‘ট্যানারি মালিকেরা সবসময় সিন্ডিকেট দিয়ে চামড়া কেনে এবং দাম পরিশোধের বেলাতেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অল্প করে টাকা দেয়, যা দিয়ে আমরা ব্যবসা চালাতে পারি না।’

পাঁচবিবি উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ী অহেদুল হোসেন ছোটন জানান, এবার চামড়া পাচার হওয়ার প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে। পাচার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে এ শিল্প করোনার মধ্যেও লাভের মুখ দেখবে।

কোরবানির আগেই পুঁজি সরবরাহ করে চামড়া শিল্পকে সচল রাখবে ট্যানারি মালিকেরা এমন আশা ব্যক্ত করে জেলা চামড়া ব্যাবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শামিম আহমেদ বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি চামড়া শিল্পের প্রসারে কাঁচামাল লবণের দাম স্থিতিশীল রাখাসহ চামড়া পাচার রোধ ও বকেয়া টাকা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এ শিল্প টিকে থাকবে।’

চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন উল্লেখ করে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাঁটায় ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তাঁরকাটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাগুলোকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।

চামড়া পাচার ঠেকাতে বিজিবি সক্রিয় থাকবে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/এমও

চামড়া ট্যানারি মালিক পাচারের শঙ্কা সীমান্তবর্তী জেলা

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর