আকায়েদের ঢাকায় শিবির কানেকশন!
১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:২৬ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:৫৮
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ম্যানহাটনে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন আকায়েদ উল্লাহর জঙ্গি কানেকশনের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলাম ছাত্রশিবিরের কানেকশন ছিল বলে জানা গেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছেন।
সূত্রগুলো জানায়, ১৭-১৮ বছর আগে আকায়েদের বাবা মো. সানাউল্লাহ ঢাকার হাজারীবাগে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি চামড়ার ব্যবসা করতেন। সে সুবাদে আকায়েদ উল্লাহ হাজারীবাগেই বড় হয়েছেন। সেখানে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। শিবিরের বিভিন্ন সাংগঠনিক তৎপরতায় তার সরব উপস্থিতিও ছিল। ২০০৪ সালে জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার যখন ক্ষমতায় তখন তিনি শিবিরের সাথী পর্যায়ের একজন কর্মী ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরপর আর তাকে দেখা যায়নি।
তবে অভিবাসন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর সেখানে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকদের সমন্বয়ে গঠিত মুসলিম উম্মাহ কিংবা একই শ্রেণির কোন সংগঠনের সঙ্গে আকায়েদ উল্লাহকে দেখা যেত না। সেখানে তিনি নিজের অবস্থান পাল্টে যুক্তরাষ্ট্র ব্রকলিন শাখার বিএনপি নেতা বনে যান। এরপর তিনি আইএস এর সঙ্গে যুক্ত হন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যদিকে র্যাবের গণমাধ্যম কর্মকর্তা এএসপি মিজানুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আকায়েদের ব্যাপারে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে শিবির কানেকশনের বিষয় ছিল কিনা তা সঠিক তথ্য ছাড়া বলতে পারব না।
যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর বাংলাদেশী যুবক আকায়েদের ব্যাপারে জানতে ঢাকা ও স্বন্দীপে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনভর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
বিকেল ৩টায় ধানমন্ডির মনেশ্বর রোডের ১০ এর ১ নম্বর বাসা থেকে আকায়েদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই, শ্বশুড় জুলফিকার হায়দার ও শ্বাশুড়ী মাহফুজা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, আকায়েদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেসব তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে তা যাচাই করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী জানা যায়, ২০১১ সালে ফ্যামিলি ভিসার মাধ্যমে আমেরিকায় যায় আকায়েদ। আমেরিকার ব্রকলিনে পরিবারের সঙ্গে বাস করত। সেখানে আকায়েদ গাড়ি চালক ছিল।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসে আকায়েদ জিগাতলার মেয়ে জুঁইকে বিয়ে করে। এরপর সে চলে যায়। এ বছরের ১০ জুন আকায়েদ ছেলে সন্তানের জনক হলে ১৮ সেপ্টেম্বর দেশে আসেন। এরপর ২২ অক্টোবর আবার আমেরিকায় ফিরে যান।
তার শ্বশুর জুলফিকার হায়দার ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে একটি স্বর্ণের দোকানে কাজ করেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে তার কোনো জঙ্গি কানেকশন আছে কী না তা জানার চেষ্টা চলছে।
সারাবাংলা/ইউজে/জেডএফ