Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢামেকের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের সারি, করোনা রোগী আসছে সারাদেশ থেকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুলাই ২০২১ ২২:৩৯

ছবি: হাবিবুর রহমান, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নবাবগঞ্জের চরলোটাখোল থেকে এসে ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে রোববারই (২৫ জুলাই) ভর্তি হয়েছেন মনোয়ারা বেগম (৫৪) ও তার মেয়ে বিথী আক্তার (২৭)। কয়েকদিন ধরেই তাদের দুজনের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন দুজন। কিন্তু তাদের করোনা পজিটিভ হওয়ায় এখানে এসে ভর্তি হন।

মনোয়ারা বেগমের ছেলে সোহেল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মায়ের আগে থেকেই ডায়াবেটিক ও প্রেসার ছিল। গত চার/পাঁচ দিন ধরে শ্বাসকষ্ট। সাথে বোন বিথীরও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য প্রথমে নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে ভর্তি রেখে দুজনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়। আজই তাদের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। পরে দুপুরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করি।’

বিজ্ঞাপন

এভাবেই একের পর এক রোগী আসছে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে। ফেনী থেকে রোকেয়া বেগমকে (৭৪) নিয়ে এসেছেন মেয়ে রাশিদা বেগম। সারাবাংলাকে তিনি জানান, তাদের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায়। তার মায়ের আগে থেকেই ডায়াবেটিক ও হাই প্রেসার আছে।

রাশিদা বেগম বলেন, ‘মা বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পাঁচ দিন আগে বাসা থেকেই মায়ের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে যায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো রেজাল্ট আসেনি। অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

রোববার দুপুরে করোনা ইউনিটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেসের সারি, একের পর এক রোগী আসছে, প্রায় সব রোগীর মুখে অক্সিজেন লাগানো। নতুন ভবনের করোনা ইউনিটের ওয়ার্ড মাস্টার মোহাম্মদ রিয়াজ সারাবাংলাকে জানান, গতকাল শনিবার দুপুড় ১২টা থেকে রোববার দুপুড় ১২টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন ২৮ জন। বর্তমানে রোগী ভর্তি আছেন ৫৪৩ জন। বেড খালি আছে ৩২টি। এছাড়া মারা গেছেন ১৭জন।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনা ইউনিটে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ জন করে মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে সাসপেক্টেড বেশি। করোনা ইউনিটের কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, দুটি ওয়ার্ডের আটটি বেড খালি পড়ে আছে। রোগীর স্বজনরা সেটা ব্যবহার করছে। কয়েকজন ওয়ার্ড বয় জানান, এই বেডগুলোর পাশে অক্সিজেন পোর্ট না থাকায় রোগী রাখা সম্ভব হয় না। কারণ করোনা রোগীর জন্য অক্সিজেনটাই বেশি প্রয়োজন।

হাসপাতালের ৮০১ও ৮০২ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দুটি রুমের প্রায় ১২টি বেড ফাঁকা পড়ে আছে। রাবেয়া নামের এক আয়া জানান, এগুলো হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু একটি বেডেও রোগী ছিল না।

এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ বলেন, ‘যে বেডগুলো খালি দেখেছেন সেগুলো হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ। এগুলোতে বাইরের রোগী দেওয়ার সুযোগ নাই। কারণ কখন কোন কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পরে সেটাতো বলা যায় না।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় ঢামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল দেশের সবচেয়ে বৃহৎ হাসপাতাল। এখানে প্রায় ৬৪টি জেলা থেকে রোগী আসে। বর্তমানে করোনা প্রতিটি জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেখান থেকেও ঢামেকে রোগী আসা আসতে শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কোনো রোগীকে আমরা ছোট করে দেখি না। আমাদের সাধ্য মতো তাদের ভর্তি করে নিই। বর্তমানে করোনা রোগী যেভাবে বাড়ছে এই ধারা অব্যাহত থাকলে চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। ঈদের আগে বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে হঠাৎ রোগী বেড়ে গিয়েছিল। ঈদের পর কঠোর বিধিনিষেধের কারণে রোগী সংখ্যা কিছুটা কমেছে।’

ডা. আশরাফুল বলেন, ‘নতুন ভবনে কয়েকটি ওয়ার্ডে কিছু খালি বেড আছে। সেগুলো অতিরিক্ত। সেগুলোর পাশে অক্সিজেন পোর্ট শুরু থেকেই ছিল না। যদি রোগী অতিরিক্ত হয়ে যায়, তবে ভর্তি রোগী যাদের অক্সিজেন দরকার হয় না তাদের ওই বেডে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সাপোর্ট রয়েছে। এছাড়া হাই-ফ্লো-নজেল ক্যানোলা রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে আমরা রোগীদের অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে পারছি।’

ছবি: হাবিবুর রহমান, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট

সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম

করোনা রোগী টপ নিউজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর