ঢাকা: আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে গড়ে তোলা ভুঁইফোঁড় সংগঠন ‘বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মনির খান ওরফে দর্জি মনিরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এবং এডিট করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি বসিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন চাকরি দেওয়া, পদায়নের জন্য অনেক লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন মনির।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দর্জি মনিরের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলার এজাহার আদালতে আসে। মামলার এজাহারে এসব উল্লেখ করা হয়।
এদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসীর আদালত তা গ্রহণ করে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই অনিরুদ্ধ রায়কে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছোট দর্জির দোকানে চাকরি করতেন মনির। হঠাৎ করে সে নিজেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আইডির মাধ্যমে বন্ধু হয়। সে একেক সময়ে একেক রাজনৈতিক পদবী, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমডি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ছাড়াও আরও অনেক মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে নিজের ছবি কম্পিউটার সফটওয়্যার মাধ্যমে এডিট করে বসিয়ে নিজেকে বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পদের নাম ব্যবহার করে।
সে এবং তার সহযোগীরা ঢাকা মহানগরীতে এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কমিটি দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেয়। সে তার ভুঁইফোড় সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় এবং রাজনৈতিক প্রধানের নাম করে টাকা আদায়, বিভিন্ন চাকরি দেওয়া এবং পদায়নের জন্য অনেক লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে।
গত ৩০ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে কামরাঙ্গীরচর থানার মাদবর বাজার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে তার সংগঠনের পদ প্রদানের ও বিভিন্ন বড় বড় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে দেওয়ার নাম করে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে ছবি এডিট করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি এবং বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ মানুষদের ঠকিয়ে তাদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে যে সে এক বিরাট নেতা। যার ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার উপক্রম হয়।