ঢাকা: ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর পূর্ব গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে আট নম্বর সড়কে নিজ বাসায় খুন হন ব্লগার নিলয়। ছয় বছর পরেও আলোচিত ওই হত্যা মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুই হয়নি।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খুব শীঘ্রই চার্জগঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজের আদালতে চার্জগঠন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এর আগে, সিএমএম আদালত থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলাটি পাঠানো হয়।
সর্বশেষ, ১০ মার্চ আদালত থেকে চার্জশুনানির তারিখ ৮ এপ্রিল ধার্য করে মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করার আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আদালত বন্ধ থাকায় চার্জশুনানি আর এগোয়নি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) তাপস কুমার পাল জানান, সিএমএম আদালত থেকে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি হয়ে আসে। কিন্তু করোনার কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের আদালতের মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে।
মামলার বাদি নিলয়ের স্ত্রী আশামণি জানান, এতদিন হয়ে গেল এখনো মামলার কোনো বিচার হলো না। শুধুমাত্র নিলয় নয়, অন্যসব ব্লগার হত্যা মামলারও বিচার হওয়া উচিত। তরতাজা মানুষগুলোকে কিভাবে তারা হত্যা করে? মামলাটির দ্রুত বিচারের জন্য সরকারি সুদৃষ্টি এবং আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাঈদ হাসান স্বপন জানান, আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। এরপরও তাদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। মামলাটি চার্জশুনানির পর্যায়ে আছে। আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করতে চান তিনি।
তারপরও যদি চার্জগঠন হয়ে যায় তাহলে ট্রায়ালের মাধ্যমে আসামিদের নির্দোষ প্রমাণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে জানান ওই আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ১৩ জনকে আসামি করে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, মেজর (বহি.) সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়া, মো. মাসুম রানা, সাদ আল নাহিন, মো. কাওসার হোসেন খাঁন, মো. কামাল হোসেন সরদার, মাওলানা মুফতি আব্দুল গফ্ফার, মো. মর্তুজা ফয়সলে সাব্বির, মো. তারেকুল আলম ওরফে তারেক, খায়রুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে রিফাত ওরফে ফাহিম ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাহাব, মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জুবায়ের।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর পূর্ব গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডের কাছে আট নম্বর সড়কে নিজ বাসায় খুন হন নিলয়। চার যুবক বাসা ভাড়ার কথা বলে নিলয়ের বাসায় ঢুকে তার স্ত্রী আশামনিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর নিয়লের গলা ও ঘাড়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আশামনি অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার চার্জশিট দাখিল করা হলেও এখনো চার্জগঠন আটকে আছে।