ডিএসসিসিতে এডিসের প্রজনন ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি
২৫ আগস্ট ২০২১ ১৫:৫৪
ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) সবচেয়ে বেশি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র পাওয়া গেছে। নির্মাণাধীন ভবন, ফুলের টব, প্লাস্টিক, ড্রাম জাতীয় স্থানে এডিসের প্রজনন ক্ষেত্র শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তিন হাজার বাড়িতে জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দফতর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান এসব তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের তিন হাজার বাড়িতে গত ২৯ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত দুইটি সার্ভে পরিচালনা করা হয়। ২০টি টিমের মাধ্যমে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ৯৮টি ওয়ার্ডে ১০০ স্থানে জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে দেখা গেছে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই ওয়ার্ডে এডিসের প্রজনন ৭৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর উত্তর সিটি করপোরেশনের এক ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি ২০ শতাংশ।’
তিনি জানান, জরিপে কন্টেইনারে জমানো পানিতে লার্ভা পাওয়া গেছে ১৮.০৫%, প্লাস্টিক ড্রামে ১২.০১%, প্লাস্টিক বালতিতে ৯.০৪%, ফুলের টব ও ট্রেতে ৭.০৫%, পরিত্যক্ত গাড়ির টায়ার ৬.০৯%, রঙের কৌটায় ৩.০২% এবং অন্যান্য উৎসে ৬.০৬%। অন্যদিকে, বহুতল ভবনে ৪৪.০২%, একক ভবনে ২৪.০৫%, নির্মাণাধীন ভবনে ১৯.০১%, বস্তি এলাকায় ৯.০৭%, পরিত্যক্ত জমিতে ২.০৬% এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
দুটি জরিপে বর্ষা মৌসুমে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩০টি এলাকায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। ডা. আফসানা আলমগীর বলেন, ‘ডেঙ্গু এখন এলাকা বিশেষে হচ্ছে। আগে যেমন অনেক এলাকায় একসঙ্গে পাওয়া যেত, এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা ২০১৯ সালে ফেলে দেওয়া টায়ারে এডিসের সংখ্যা বেশি দেখেছি। এবার তা নেই বললেই চলে। এবার ফুলের টব, ভাঙা প্লাস্টিক, ড্রামে বেশি পাওয়া যাচ্ছে এডিসের লার্ভা।’
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশেনের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ারি, মতিঝিল, মুগদা, বাসাবো, যাত্রাবাড়ি, খিলগাঁ, শান্তিনগর, সিদ্ধেশরী, পল্টন, টিকাটুলি, গ্যান্ডারিয়া, শাহজাহানপুর ও রমনায় ডেঙ্গু শনাক্তের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। আর উত্তর সিটি করপোরেশনের রামপুরা, বনশ্রী, উত্তরা, বসুন্ধরা, কল্যাণপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, বারিধারা, দক্ষিণ খান ও কাফরুলে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দেখা গেছে।
বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকে মাঠে আছি, আমরা মাঠে থাকব। কাউন্সিলর, রাজনৈতিক নেতা সবাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে কাজ করছি।’ তিনি স্বাস্থ্য অধিদফতরকে তথ্য আরও আগে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ভিয়েতনাম, শ্রীলংকায় ডেঙ্গু পরিস্থির ভয়াবহতা তুলে বলেন, ‘বাংলাদেশ এসব দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি আরও দ্রুত উন্নত হবে আবহাওয়া অনুকূলে এলে।’
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম