যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপরে
২৭ আগস্ট ২০২১ ১৮:০৭
সিরাজগঞ্জ: ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টেও বেড়েছে যমুনা নদীর পানি।
নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নদীপারের হাজারো মানুষ। সেই সঙ্গে বিপাকে রয়েছেন গো-খামারিরা।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যমুনা ও অভ্যন্তরীণ চলনবিল, ইছামতি, করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়াল নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, তেকানি, মুনসুরনগর ও খাসরাজবাড়ি ইউনিয়ন এবং চৌহালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও বসতভিটা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, অতিমাত্রায় বৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। আরও কয়েকদিন পানি বাড়বে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।
জেলার ৭টি উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন। বন্যা প্লাবিত এলাকায় বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমিতে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়ছে জনসাধারণ। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। নদীর পার থেকে ঘর-বাড়ি সরিয়ে
নিচ্ছেন ভাঙন কবলিতরা।
এদিকে, পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ গো-চারণভূমি ও সবুজ ঘাস। ফলে দুই লাখের বেশি গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গো-খামারিরা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়িতে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে গবাদি পশু।
চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বেনুনাই গ্রামে কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। এসব এলাকার ১৩টি গ্রামের অসংখ্য বসতবাড়ি ধীরে ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ভুঁইয়া জানান, যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এরইমধ্যে অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাচ্ছে গো-চারণ ভূমি ও ফসলি জমি। পানিবন্দী হচ্ছে চরাঞ্চলের শত শত পরিবার।
তবে বন্যায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ শুরু করেছে। জেলার ৭টি উপজেলার জন্য সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ্দ মজুত রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী পানিবন্দী মানুষদের মাঝে বরাদ্দগুলো বিতরণ করা হবে। এছাড়াও আমাদের নিকট পৌনে ৬০০ টন চাল মজুত রয়েছে। পর্যায়ক্রমে মজুতকৃত চাল বিতরণ করা হবে।
সারাবাংলা/আইই