Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘাটের শেষ নৌকায় শেষযাত্রা, গেল ১৯ প্রাণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ আগস্ট ২০২১ ২২:৩৯

ঢাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কা বিলে নৌকাডুবিতে ১৯ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সেখানে উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের পাশে ভাতের খোলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ওই নৌকাটি চম্পকনগর ঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে যাচ্ছিল। এটি ওই ঘাটের শুক্রবারের মতো শেষ নৌকা হওয়ায় তাতে হুড়োহুড়ি করে লোক উঠে পড়ে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে নৌকাটি একটি বালুবাহী ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়।

বিজয়নগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তার সায়মা সারাবাংলাকে জানান, ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯ নারী ও তিন শিশু রয়েছে। এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে।

যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান। তবে দুর্ঘটনার পরপরই বেশ কয়েকজন যাত্রী তীরে আসতে সক্ষম হন।

দুর্ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের তত্ত্বাবধানে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। তবে ডুবুরি দল না থাকায় উদ্ধার অভিযানে বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছেন। বিলে ডুবে যাওয়া নৌকাটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ঘটনাস্থলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া উপস্থিত রয়েছেন।

ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (সার্বিক) রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য সার্বিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে।’

নিহত ১৯ জনের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় জানা গেছে। এরা হলেন চম্পকনগরের গেরাগাওয়ের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৫৮), তার আত্মীয় আবদুল হাশিম মিয়ার স্ত্রী রওশন আরা (৬৫), তার মেয়ে ও জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩০), পত্তনের বড়পুকুর পাড় গ্রামের সোলায়মান মিয়ার স্ত্রী রুবিনা বেগম (৪০), পত্তনের আদমপুর গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনা (৪২), ব্রাহ্মবাড়িয়ার পৈত্তলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা (৩৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের হাজী মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১৩), বিজয়নগরের মুকুন্দপুর গ্রামের জহিরুল ইসলামের স্ত্রী শারমিন (১৮)।

জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকাটি চমম্পকনগর ফতেহপুর গ্রামের সোনা মিয়া মাঝির নৌকা। প্রতিদিন এ নৌকায় চমম্পকনগর থেকে যাত্রীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া যান। শুক্রবার বিকেলে শেষ খেয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে নৌকাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিল। পথের মধ্যে বালুবাহী একটি ট্রলার ধাক্কা দিলে সোনা মিয়ার নৌকাটি ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত ১৯ লাশ উদ্ধার হয়েছে। বালুবাহী ট্রলারটি আটক করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভূইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপর আমরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করি। কিশোরগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী ডুবুরি দল রওনা দিয়েছে। তারা এলে উদ্ধারকাজ আরও জোরালো হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, শেষ খেয়া ছিল বলে ইঞ্জিনচালিত স্টিলের নৌকাটিতে অন্তত দেড়শ যাত্রী উঠে পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার পথে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের পাশে ভাতের খোলায় এলে বালুবোঝাই একটি নৌকা তাদের নৌকাকে ধাক্কা দিলে সেটি ডুবে যায়। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

 

সারাবাংলা/একে

১৯ লাশ নৌকাডুবি ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর