‘আঘাতের চিহ্ন মেলেনি, অন্তর্ঘাত কিনা খতিয়ে দেখতে হবে’
৩১ আগস্ট ২০২১ ১৩:৪৯
ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতুর স্প্যানের সঙ্গে ফেরির ধাক্কার ঘটনার পর আমি নিজেও ছুটে এসেছি। সেতুর আর্মি, বিআইডাব্লিউটিসি, বিআইডাব্লিউটিএ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কোনো প্রকার আঘাত বা আঘাতের কোনো প্রকার প্রভাব রয়েছে, এমন কিছু পায়নি তারা।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে পদ্মা সেতুর স্প্যানে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ধাক্কার ঘটনায় পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে পদ্মাসেতুর ২ ও ৩ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি অংশের স্প্যানে ধাক্কা দেয় ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। তবে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো আঘাতের ‘চিহ্ন পাওয়া যায়নি’ বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরেজমিনে এসে সংশ্লিষ্টদের পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো ধরনের অন্তর্ঘাত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
আরও পড়ুন: এবার পদ্মাসেতুর স্প্যানে ফেরির ধাক্কা
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেহেতু ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে, পদ্মাসেতুর স্প্যানে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর জাহাজটি ধাক্কার যে খবর বেরিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’
বারবার কেন দেশের এই স্বপ্নের সেতুতে আঘাত হচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের আঘাত যাতে আর না হয় সেজন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রী যথাযথ তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘কোনোভাবেই বিষয়টি হালকাভাবে নিলে চলবে না।’
২০০১ সালে তৎকালীন সরকার বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান হিসেবে একজন অযোগ্য লোককে নিয়োগ দেয়। তখন এ নিয়ে মিডিয়ায় অনেক সমালোচনা হয়। এই চেয়ারম্যানকে নিয়ে তখনকার একটা গ্রুপ জাহাজ ও ফেরি ব্যবসায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হতো বলেও ব্রিফিংয়ে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, ‘সেই লোকেরা এখন এখানে জড়িত কিনা সেজন্য অবশ্যই তদন্ত করা হবে, কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা?’
ফেরির ধাক্কায় পদ্মা সেতুর কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি এটা বলতে পারি যে ওখানে কোনো ড্যামেজ হয়নি।’
পদ্মাসেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু) দেওয়ান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের সারাবাংলাকে বলেন, ফেরিটি পদ্মাসেতুর স্প্যানে ধাক্কা দিয়েছে। ভিডিওতে পরিস্কার দেখতে পেয়েছি।
গত ২০ জুলাই পদ্মাসেতুর ১৬ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রো রো ফেরি শাহ মখদুদের তলা ছিদ্র হয়ে যায়। এর তিন দিনের মাথায় ২৩ জুলাই মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহজালাল পদ্মাসেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে তীব্র জোরে ধাক্কা দেয়। ওই ঘটনায় ফেরিতে থাকা অন্তত ২০ জন যাত্রী আহত হন। এরপর ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আবার ধাক্কা লাগে ১০ নম্বর পিলারের। এতে পিলারের পানি লাগোয়া অংশে (পাইল ক্যাপ) পলেস্তার উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়।
পরে গত ১০ আগস্ট ওই স্থান দিয়ে ভারী যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তারপরও চারদিন বাদে ১৩ আগস্ট আবার ধাক্কা লাগে ফেরি কাকলির।
আরও পড়ুন- ৪ ধরনের ভয়াবহ ধাক্কা-দুর্যোগ সামলাতে সক্ষম পদ্মাসেতু
সারাবাংলা/এনআর/এএম/এমও