Thursday 28 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এখনও যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শক্তি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২১ ১৮:০১

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এখনও পরাজিত শক্তি, ১৫ আগস্টের খুনি, যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসররা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে, ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তাদের কিছু কিছু শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন। জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দলটির মাসব্যাপী কর্মসূচি আজ ছাত্রলীগের আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শেষ হলো।

বিজ্ঞাপন

সভার শুরতে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের নিহত শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রকাশনা পত্রিকা ‘মাতৃভূমি এবং জয় বাংলা’ ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

পরে স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কখনই পশ্চিমারা চায়নি যে, বাঙালি মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। তারা খুব তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো আমাদের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু লোক আছে যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সবসময় পদলেহন করে। এই চাটুকারের দল সবসময় দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা আমাদের সর্বনাশ করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় দালাল চক্র ও পাকিস্তানি বাহিনীর দোসররা চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক। তার পরও বাংলাদেশ স্বাধীন হলো, বিজয় অর্জন করল। আর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজিত হলেও তাদের দোসররা সেই প্রতিশোধ নিতেই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। ভাবখান এমন হয়েছিল যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

পঁচাত্তরের পরে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে হত্যাকাণ্ড-ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেখানে আওয়ামী লীগের কিছু বেঈমান-মোনাফেক-মীরজাফর ছিল। আর তাদের শক্তি জিয়াউর রহমান ছিল বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমান কখনও গুলি চালিয়েছিল- এ রকম নজির কিন্তু নেই। অথচ জিয়া ছিলেন মেজর। স্বাধীনতার পর মাত্র তিন বছরের মধ্যে মেজর থেকে তাকে প্রমোশন দিয়ে মেজর জেনারেল করা হয়েছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বদৌলতেই কিন্তু জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হয়েছিলেন। আর পাকিস্তান নামক দেশটা থাকলে ওই মেজর হিসেবেই তার অবসর নিতে হতো। তার উপরে উঠতে পারত কি না সন্দেহ? কিন্তু সেই জিয়া বেঈমানি ও মুনাফেকি করেছিল। তখন তার যে ভূমিকা নেওয়ার কথা ছিল সেটা নেয়নি।’

এখনও আন্তর্জাতিক চক্র যুদ্ধাপরাধী পরাজিত শক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনিদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের বাধা-বিঘ্ন আসতে থাকবে। কিন্তু সৎ পথে থেকে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও আদর্শ নিয়ে যদি চলা যায় তাহলে যেকোনো কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কিন্তু এই বাঙালি জাতির জন্য তার বুকের রক্ত দিয়ে গেছেন। রক্ত দিয়েছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। এই রক্ত কোনদিন বৃথা যেতে পারে না। আমরা লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি। কিন্তু সব থেকে দুঃখের বিষয় এই যে, বাঙালির জন্য জাতির পিতা জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন। জীবনের সব থেকে মূল্যবান সময়গুলো কারাগারে কাটিয়েছেন। আর সেই বাঙালির কিছু কুলাঙ্গার জাতির পিতার বুকে গুলি চালাল। পুরো পরিবারকে হত্যা করল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বড় বেঈমানি। আর এরা প্রত্যেকে আমাদের চেনা। এমন মাস নেই যে জিয়াউর রহমান তার বউকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসত না। কর্নেল নূর আসত। ডালিমের বউ-শ্বাশুড়ি সারাদিন আমাদের বাড়িতেই পড়ে থাকত। মোশতাক তো মন্ত্রীই ছিল। এত বড় একটা বেঈমানি করল তারা?

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান। মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর