দাঁতভাঙা জবাব দিতে ছাত্রলীগকে প্রস্তুতি নিতে আহ্বান নানকের
৩১ আগস্ট ২০২১ ১৮:৩২
ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর কেউ অচলাবস্থা তৈরির চেষ্টা করলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আর সেই জবাব দেওয়ার জন্য তিনি ছাত্রলীগকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে নানক বলেন, সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের যিনি মাতৃস্নেহে লালিত-পালিত করেন, এই বাংলাদেশকে যিনি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি শেখ হাসিনা। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেবেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিম্নমুখী হয়ে একটি পর্যায়ে পৌঁছালে অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। সেই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা তৈরির অপচেষ্টা যদি কেউ করেন, তাহলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। তার জন্য প্রস্তুতি নিন।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
আলোচনা সভায় করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মানবিক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলের বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন নানক। বলেন, এই বাংলাদেশে কিছু লোক আছে যারা বুঝেও বলে, না বুঝেও বলে। আজ অনেকেই শিক্ষার জন্য মায়া-মহব্বত দেখাচ্ছেন। কারা মায়া-মহব্বত দেখায়? মির্জা ফখরুল সাহেব (বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) বলেন, সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছে। মির্জা ফখরুল সাহেব বলেন, সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয় না আন্দোলনের ভয়ে।
বিএনপি মহাসচিবের প্রতি প্রশ্ন রেখে নানক বলেন, কোন আন্দোলনের ভয়ে? কার আন্দোলনের ভয়ে? কোনো আন্দোলনকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ভয় না। কারণ আপনাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে গেছে। জনমুখী-গণমুখী দাবির কোনো আন্দোলন নেই, আপনারা আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আপনাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে বাংলার জনগণ।
‘শিক্ষার প্রতি মায়া-মহব্বত দেখান? দেখান তো একটু, বেগম খালেদা জিয়া কিংবা জিয়াউর রহমান কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন? জিয়াউর রহমান শিক্ষাকে একটি পণ্যে পরিণত করেছিলেন, শিক্ষাকে একটি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছিলেন। শিক্ষা একটি দুষ্প্রাপ্য বিষয় ছিল এ দেশের মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য। সেই সময় শিক্ষাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। তাই বাংলাদেশ শিক্ষা আজ গণমুখী শিক্ষায় পরিণত হয়েছে,’— বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক।
জাতীয় শোক উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাসব্যাপী কর্মসূচি আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এই আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শেষ হলো। সভার শুরুতে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রকাশনা পত্রিকা ‘মাতৃভূমি এবং জয় বাংলা’ ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর