মিনুর মৃত্যুর ঘটনা গুরুত্বসহকারে তদন্তের নির্দেশ
১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৮:৫৯
ঢাকা: চট্টগ্রামে এক নারী গার্মেন্টসকর্মী হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারের পরিবর্তে সাজা ভোগ করে কারামুক্ত নিরাপরাধ মিনুর মৃত্যুর ঘটনা গুরুত্বসহকারে (সিরিয়াসলি) তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সেইসঙ্গে এ মামলার দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওই দিন এ ঘটনায় তলব করা চট্টগ্রামের আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকতে হবে।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আর আইনজীবীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আরিফুর রহমান।
এর আগে গাড়িচাপায় মিনুর মৃত্যুর সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের নথি এবং আটক কুলসুমীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির নথিসহ দুই তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম ও কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুবায়ের মৃধা বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) আদালতে হাজির হন।
শুনানিকালে আদালত তদন্ত কর্মর্তাদের উদ্দেশে বলেন, কেন মিতু রাত তিনটায় বাসা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গেলেন। তাকে প্রক্সি দিয়ে জেল খাটানোর ঘটনায় আটকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না অথবা শুধুই আটকরাই প্রক্সির ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে জড়িত কি না, নাকি অন্য কেউ আছে- এসব বিষয় সিরিয়াসলি তদন্ত করবেন। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ইনস্ট্রাকশন নেবেন।
গত ২৮ জুন রাতে বায়েজিদ সংযোগ সড়ক থেকে দুর্ঘটনায় নিহত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে মৃতদেহ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। পরে বায়েজিদ থানার একটি টিম সীতাকুণ্ড এলাকার লোকজনকে ছবি দেখিয়ে মিনুর পরিচয় শনাক্ত করে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ২৯ জুন একটি মামলা হয়। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। আর খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত কুলসুমকে ২৯ জুলাই গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রতারণার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় কুলসুমের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। তিনি জবানবন্দিও দেন। প্রতারণার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন জুবায়ের মৃধা। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর আদালত নথিসহ দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন।
এর আগে, গত ১৬ জুন একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীর পরিবর্তে তিন বছরেরও অধিক সময় কারাভোগ শেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মিনু চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। সে সময় প্রকৃত আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম