সালিশে একঘরে করে রাখার অভিযোগ: ৩ পরিবারকে নিরাপত্তার নির্দেশ
৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৪৯
ঢাকা: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কোরবানপুরে গ্রাম্য সালিশ না মানায় ৯ মাস ধরে একঘরে করে রাখা ভুক্তভোগী তিন পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে গত ২৬ জানুয়ারি ও ১৬ মার্চ প্রতিকার চেয়ে আবেদনের নিষ্পত্তি করতে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী সুমন জানান, স্বত্ত্ব মামলা করার কারণে এ তিন পরিবারের সদস্যদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়। মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল, হাট-বাজার কোথাও যেতে পারছে না তারা। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, মৌলিক অধিকরের লঙ্ঘন।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় সালিশকারীরা এটি করেছে। বিভিন্ন সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পায়নি তারা। যে কারণে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়।
বিভিন্ন দৈনিকে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর যুক্ত করে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন সদস্য মো. আকমল হোসেন, কাজল আহমেদ ও রুমানা আক্তার গত বুধবার হাইকোর্টে রিটটি করেন।
জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে গ্রাম্য সালিশ না মেনে স্বত্ত্ব মামলা করায় গত বছর ৫ ডিসেম্বর থেকে এ তিন পরিবারকে একঘরে করে রাখেন বলে সালিশকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
কুলাউড়ার উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির সারাবাংলাকে বলেন, ‘তিন শতাংশ জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ হওয়ায় আমি উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে আপস-মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সমাধানে পৌঁছাতে পারিনি। পরে একপক্ষ আদালতে গেছেন।’
উচ্চ আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ দিলে সেটা প্রতিপালন করবেন বলে জানান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও