বাঁশখালীতে খুন করে বরিশালে আত্মগোপন, গ্রেফতার ৪
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৯:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় দুই পা বিচ্ছিন্ন করে নৃশংসভাবে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক সদস্যকে খুনের সাড়ে পাঁচ মাস পর বরিশাল থেকে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশন (পিবিআই)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই জানিয়েছে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে বর্তমান ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় ও নেতৃত্বে তাকে খুন করা হয়। খুনের পর গ্রেফতার এড়াতে চার আসামি বরিশালে বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে বরিশাল নগর ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানিয়েছেন।
গ্রেফতার চারজন হলেন আবদুল কাদের (৫০), তার স্ত্রী হাছিনা বেগম ও ছেলে মো. রিদুয়ান (২৪) এবং জামাতা তৌহিদুল ইসলাম। তাদের বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব চাপাছড়ি গ্রামে।
এর আগে, গত ১৯ মার্চ গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে চাপাছড়ি গ্রামে আবুল বাশারের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দুই পা বিচ্ছিন্ন করে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর পায়ের দ্বিখণ্ডিত অংশ নিয়ে তারা উল্লাস করে গ্রামে। আবুল বাশার (২৬) বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চাপাছড়ি ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।
এ ঘটনায় বাহারছড়া ইউনিয়নের চাপাছড়ি ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য নাছির উদ্দিনসহ ১২ জনকে আসামি করে নিহত আবুল বাশারের স্ত্রী খালেদা আক্তার বাদি হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। বাদির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একমাস আগে মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেয় পিবিআই।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম জেলা) নাজমুল হাসান সারাবাংলাকে জানান, ঘটনার পর বাঁশখালী থানা পুলিশ ইউপি সদস্য নাছিরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার চারজনের মধ্যে আবদুল কাদের ও তার ছেলে রিদুয়ান পালিয়ে বাঁশখালী চলে যান। পরবর্তীতে তাদের জামাতা তৌহিদুল বাঁশখালী মহানগরে গিয়ে একটি বাসা ভাড়া নেন। এরপর আবদুল কাদেরের স্ত্রী হাছিনাকেও নিয়ে যাওয়া হয়। তারা চারজন সেখানে আত্মগোপন করে ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, আবুল বাশার বিএনপির রাজনীতি করেন। তাকে হটিয়ে ইউপি সদস্য হন আওয়ামী লীগের নাছির। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। এর আগে থেকে দুই পরিবারের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। আবুল বাশারের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছিল। এসব বিরোধের জেরে নাছিরের পরিকল্পনায় আবুল বাশারকে খুন করা হয়।’
গ্রেফতার চারজনকে রোববার বিকেলে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে পিবিআই কর্মকর্তা নাজমুল হাসান জানিয়েছেন।
সারাবাংলা/আরডি/একে