Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কেয়া কসমেটিকসের মালিক ও স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে দুদকের ৫ মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৩৯

ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সচিব মো আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মামলাগুলো করা হয়।

এজাহারে কেয়া কসমেটিকসের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ফিরোজা বেগম, বড় মেয়ে ও প্রতিষ্ঠানের এমডি খালেদা পারভীন, পরিচালক মো. মাসুম পাঠান ও ছোট মেয়ে তানসীন কেয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ২৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়— কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। যা যাচাই-বাছাই করে ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক।

এ ছাড়া আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তাদের নামে পৃথক পাঁচটি সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদক সচিব বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়।

দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে— আসামি আবদুল খালেক পাঠান তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। কিন্তু যাচাইয়ের সময় প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে মোট ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৪২৪ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে তিনি ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

অন্যদিকে আব্দুল খালেক ১৯৯৮-৯৯ করবর্ষ থেকে সব নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে ৫২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৬ টাকা মূল্যের সম্পদের রেকর্ডপত্র পাওয়া গেছে। ওই সম্পদের বিপরীতে খালেক পাঠানের গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৫১ টাকা। অর্থাৎ ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অসাধুভাবে অর্জন করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক। যে কারণে তাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে আবদুল খালেক পাঠানের স্ত্রী ও কেয়া কসমেটিকসের পরিচালক মিসেস ফিরোজা বেগমের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৮৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে দুদকের অপর মামলায়। এ ছাড়া ২০১৯ সালের ২৩ জুন দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই-বাছাই করে দুদক ফিরোজা বেগমের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছে।

কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক ও আব্দুল খালেকের ছেলে মো. মাসুম পাঠানের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৭২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৫ টাকার সম্পদের অভিযোগে আরও একটি মামলা হয়েছে। মাসুম পাঠান ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছিলেন।

আব্দুল খালেক পাঠানের মেয়ে ও কেয়া কসমেটিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস খালেদা পারভীনের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার ৩৬১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অর্থাৎ অবৈধভাবে অর্জিত ২ কোটি ৩৫ লাখ ৫১ হাজার ১৮০ টাকার সম্পদের মালিকানার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

একইভাবে তার অপর মেয়ে ও কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক মিসেস তানসীন কেয়ার নামে ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় পঞ্চম মামলাটি করে দুদক। এছাড়া তানসীনের ঘোষিত সম্পদ বিবরণীতে ২৫ কোটি ৯ লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে দুদকের মামলায়।

সারাবাংলা/এসজে/একে

কেয়া কসমেটিকস দুদক দুর্নীতি দমন কমিশন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর