চবিতে চলছে হল খোলার প্রস্তুতি
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৫৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয়েছে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর মধ্য অক্টোবরের আগেই খুলতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ কারণে হল খোলার প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের শতভাগ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে ৪৮ হাজার ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভ্যাকসিন আসলে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের কয়েকজন প্রভোস্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলের যেসমস্ত কাজ সংস্কার করা প্রয়োজন তা সম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হলে ওঠাতে সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে হল খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য ৮টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৫টিসহ মোট ১৩টি আবাসিক হল আছে। এর মধ্যে ছাত্রদের দুটি ও ছাত্রীদের একটিসহ মোট তিনটি ছাত্রাবাস নতুন নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলো এখনও খুলে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আলাদা দুটি ছাত্রাবাস।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন গ্রহণের নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশন শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে সিন্ডিকেট। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের নিয়েও বৈঠক হয়। বৈঠকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। মধ্য অক্টোবরের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেবে বলে অভিমত জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুননাহার হলের প্রভোস্ট ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড.লায়লা খালেদা আঁখি সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের হল খোলার শতভাগ প্রস্তুতি আছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আমাদের হল সংস্কার কাজ করার জন্য সাহায্য করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যেসব সমস্যা ছিল সব সমাধান করছি। হল খোলার পরেও ছাত্রীরা যদি সমস্যার কথা জানায় তাও সমাধান করে দেব। আমরা যেদিন হল খোলার নির্দেশ পাব, সে দিনই হল খুলে দেব। আমাদের হল খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, হলের যেসমস্ত কাজ সংস্কার করা প্রয়োজন তা সম্পন্ন করেছি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় যেসব জিনিস সংস্কার করা দরকার তার সব করা হয়েছে। ইউজিসি, শিক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের অনলাইনে মিটিং হয়েছে। ভ্যাকসিন আসলে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে দেওয়া হবে। তখন শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিতে হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন জরিপে তথ্য পেয়েছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছেন। তাই অবশিষ্ট শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে ৪৮ হাজার ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্বিবদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের হল খোলার প্রস্তুতি আছে। শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের লিস্ট করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিনের আওতায় আসলে হল খোলা হবে।
সারাবাংলা/এনএস