নিজের জন্য শুরু করেই উদ্যোক্তা ইবি শিক্ষার্থী
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৩:৪৫
নিজের চুল পড়া সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে ২৫ ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তেল ও প্যাক তৈরি করেন। এক পর্যায়ে তা কাজে দেয়। বন্ধ হয় চুল পড়া। এরপর স্বজনদের চুল পড়া বন্ধে কাজ শুরু করেন। তারপর পরিচিতির গন্ডি পেরিয়ে উপকার পেতে শুরু করেন অন্যান্য নারী ও পুরুষ। এভাবেই উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরিন ঋতু।
ঋতু সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি নিজে চুল পড়া সমস্যায় ভুগছিলাম কিছুদিন আগে। এর থেকে মুক্তি পেতে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তেল তৈরি করি এবং নিজে ব্যবহার করতে শুরু করি। ব্যবহারের পর নিজে উপকৃত হলে পরিচিতদের দেই। তারাও যখন উপকার পেতে শুরু করেন, তখনই উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা আমার মাথায় আসে আমার।’
ঋতু জানান এখন পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি একজন ছোটখাটো উদ্যোক্তা। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোভাবে খাঁটি নারিকেল তেলের সাথে প্রাকৃতিক ২৫ টি উপাদান মিশিয়ে হেয়ার অয়েল এবং হেয়ার প্যাক বানান তিনি। ভবিষ্যতে এই ছোটখাটো ব্যবসাকে বৃহত্তর পরিসরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন ঋতু।
ঋতু বর্তমানে ঢাকা থেকে সারাদেশে বিক্রি করছেন। কুরিয়ারের মাধ্যমে সারাদেশে হোম ডেলিভারি দিচ্ছেন তিনি। পণ্যের দাম ৬০০ টাকা। পণ্য হাতে পাওয়ার ক্রেতা মূল্য পরিশোধ করে থাকেন।
ব্যবসায় কেমন সাড়া মিলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার বয়স মাত্র তিন মাস। এর মধ্যেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে। শুরু থেকেই অনেক বিক্রি হচ্ছে। গড়ে প্রতি মাসে অন্তত ৬০ টি করে পণ্য বিক্রি হয়। ফিডব্যাকও ইতিবাচক। সবাই উপকার পাচ্ছেন বলেই জানায়। অল্প দিনেই সবার চুল পড়া বন্ধ হয়েছে। আবার অনেকের কমেছে।’
জানতে চাইলে ঋতুর একজন ক্রেতা ঢাকার বাসিন্দা শাহীন আক্তার বলেন, ‘আগে অনেক চুল পড়ত। অনেক পণ্য ব্যবহারেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। অবশেষে কেশ কাহন ন্যাচারাল হেয়ার প্যাক ও হেয়ার অয়েল ব্যবহারে এক সপ্তাহের মধ্যেই চুল পড়া বন্ধ হয়েছে।’
জীবন নাহার অন্তরা নামে বগুড়ার একজন নারী জানান, ‘মাথায় হাত দিলেই চুল উঠে আসত। ফেসবুকে কেশ কাহন হেয়ার অয়েল ও হেয়ার প্যাক দেখে অর্ডার করি। এরপর সেটা ব্যবহার করার পর অল্প সময়ে চুল পড়া বন্ধ কমে। এখন বলা চলে চুল পড়া অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। খুবই ভালো মানের একটি পণ্য এটি।’
আয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মোটামুটি নিজের হাত খরচ চলার মত আয় হয়। সামনে বড় আকারে ব্যবসা শুরু করলে আয় আরও বাড়বে বলে আশা করি।’
এরকম উদ্যোগ কেউ শুরু করলে সাধারণত শুরুর দিকে নানান জনে নানান কথা বলে। ঋতুর ক্ষেত্রেও কি এরকম শুনতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একজন উদ্যোক্তার পেছনে অনেক বাঁধাই থাকে। অনেকেই পেছনে নানা ধরণের মন্তব্য করেন। কিন্তু সবকিছু অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য। আমিও সেই কাজটাই করছি। নানান জনে বলেছে, এরকম কত পণ্য দেখলাম পড়ে সবাই হারিয়ে যায়। বিশেষ করে কাছের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনরাই বেশি সমালোচনা করে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের যদি উপকারে আসে তাহলে আমার পণ্য চলবে।’
সারাবাংলা/আরএফ/