ভোটারদের দীর্ঘলাইন, কোনো কোনো কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্ট নেই
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৩:৪৯ | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৫৭
সাতক্ষীরা থেকে: সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ভোট শুরুর আগে থেকেই নারী-পুরুষ ভোটারদের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে। তবে অধিকাংশ ভোটকক্ষে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট থাকলেও অন্য কোনো প্রার্থীদের এজেন্ট চোখে পড়েনি। সরকারি দলের লোকজন বলছেন, কোনো প্রার্থীর এজেন্ট কেন্দ্রে না এলে আমাদের কী করার আছে? অন্যদিকে বিরোধী দলের লোকজন বলছেন, সরকারি দলের লোকজন বেশিরভাগ কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থীর এজেন্ট কে ঢুকতে দেয়নি।
এদিকে সোমবার সারাদেশের ১৬০টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। এদিন সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে ভোটারদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে সেখানে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শত শত নারী পুরুষ ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা সোনাবাড়িয়া ইউপি ভোটকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরে চরম উত্তেজনা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
এই ইউপির সোনাবাড়ি উত্তর, সোনাবাড়ী দক্ষিণ, রাজাপুর ও মাদুরা কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে— ভোটারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক। ব্যালট পেপারে এই ইউপিতে ভোট হচ্ছে। পুরুষ ভোটারদের চাইতে নারী ভোটারদের সংখ্যাই বেশি।
মাদুরা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সেলিনা পারভীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিজের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বৃষ্টির ভেতর ছাতা নিয়ে এসেছি।’
কলারোয়ার নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে দশটিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে, কোথাও তেমন গোলযোগ ঘটেনি।’
কলারোয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে এবার চেয়ারম্যান পদে ৩৮ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১২৪ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৮৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
সোনাখালী দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা মো. রিয়াজুল বলেন, ‘মূলত আওয়ামী লীগ আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। আগের রাতে বৃষ্টির মধ্যেও সোনাদিয়া দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হওয়ায় এলাকা কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে।’
সোনবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে— ভোটারদের দীর্ঘলাইন। নৌকা ছাড়া কেন্দ্রে অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। এজেন্টরাও নিয়ম-নীতি মানছেন না।
কলারোয়া সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বেনজীর হোসেন হেলাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। আমার জয়ের ব্যাপারে আমি অনেক আশাবাদী।’
ওই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সোনাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার সব এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে অনিয়ম চলছে, পথের মধ্যে আমার ভোটারদের মারধর করে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে সোনাবাড়িয়া সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মিজান আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো প্রার্থীর এজেন্ট না এলে আমার কী করার আছে?’
কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছি কি না জানতে চাইলে প্রিসাইডিং অফিসার এ ব্যাপারে কথা বলতে চাননি।
সারাবাংলা/জিএস/একে
ইউনিয়ন পরিষদ ইউপি মেম্বার টপ নিউজ সাতক্ষীরা সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন