মোবাইল ব্যাংকিং খাতে অসম বাজার প্রতিযোগিতা বন্ধের দাবি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:৩৩
ঢাকা: বাংলাদেশ মোবাইল ব্যাংকিং খাতে অসম বাজার প্রতিযোগিতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন নামে এক সংগঠন।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় এসএমপি বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী সুব্রত মৈত্র, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু বককর সিদ্দিকসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় মোবাইল ব্যাংকিং খাতে অসম বাজার প্রতিযোগিতা বন্ধ করে মনোপলি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে এসএমপি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার ২০০৯ সালের মে মাসে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণকে ডিজিটাল মাধ্যমে দ্রুতগতিতে ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) সার্ভিস চালু করেন। ১০ বছরের মধ্যেই এ সেবায় দৈনিক লেনদেন হচ্ছে প্রায় ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার মতো। বিপুল সম্ভাবনাময় এ খাতের গ্রাহক সংখ্যা এখনো ৪০ শতাংশেই পৌঁছায়নি।
বক্তারা আরও বলেন, এর অন্যতম কারণ উচ্চ সার্ভিস চার্জ ও দুই একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকা। যদিও ডাক বিভাগের অংশীদার মূলক একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে বাজারে এসে সার্ভিস চার্জ কমিয়ে একক কর্তৃত্ব থেকে বাজারে একটি প্রতিযোগিতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে ব্যবসায়ী কার্যপ্রণালীতে একক আধিপত্য মুক্ত করতে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) নীতিমালা প্রণয়ন করেছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, ফলে ছোট বা মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ না হারিয়ে সমানতালে টিকে থাকতে সক্ষম হয়েছে এবং ব্যবসায়িক বাজার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা ন্যায়সঙ্গত মূল্যে বা সহনীয় মূল্যে সেবা পেয়েছে। এসএমপি নীতিমালার উদ্দেশ্য বাজারে একক আধিপত্য বিস্তারকারী কোম্পানিকে কিছু নিয়ম নীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে অন্য বিনিয়োগকারীদেরকে টিকিয়ে রাখার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) টেলিকম সেক্টরে একক আধিপত্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার এসএমপি নীতিমালা প্রণয়ন করে। যার মাধ্যমে টেলিকম সেক্টরে একক আধিপত্য কমে আসে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটক অল্পসংখ্যক গ্রাহক নিয়ে বাজার প্রতিযোগিতা এখনো টিকে রয়েছে। কিন্তু বিপুল সম্ভাবনাময় ও সর্বাধিক অর্থ লেনদেন করে এ সেবায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে এখনো কোনো পলিসি বা গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়নি।
সভায় বলা হয়, বাজার নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিযোগিতা সমন্বয় করতে কোনো দিকনির্দেশনা বা নিয়ন্ত্রণ না থাকার ফলে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলি অনেক সময় একে অপরের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ বা অপপ্রচার করতে দেখা গিয়েছে। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় অবস্থানে যেতে ডাক বিভাগের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস গ্রাহক সেবা সার্ভিস চার্জ কমিয়ে, সেন্ড মানি ফ্রি, সম্পূর্ণ ফ্রি-তে বিল পে, গ্রাহকদের সেভিংস এর সর্বোচ্চ মুনাফাসহ আরও অনেক সুবিধা দিয়েছে। এর মাধ্যমেই আমরা বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে এ সেবায় বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা, করা গেলে আরও সাশ্রয়ী নিরাপদ জনবান্ধব গ্রাহক সেবা প্রদান করা সম্ভব।
সারাবাংলা/এআই/এএম