সেপ্টেম্বরে ৮ ‘বন্দুকযুদ্ধ’, কারা হেফাজতে মৃত্যু ৫
১ অক্টোবর ২০২১ ০০:২৭
ঢাকা: সেপ্টেম্বরের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। এতে দেখা গেছে, এ মাসে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে ৮টি, যাতে চার জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ মাসে কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি। গত মাসে কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা একই থাকলেও এমাসে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা একটি বেড়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফের সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী এ পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসের প্রথম দিনেই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী দৌছড়ির ছাগলখাইয়া এলাকার সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ অভিযানে জেএসএস সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে গোলাগুলি হয়। ওই ঘটনায় জেএসএস গ্রুপের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর এলাকায় র্যাবের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির পর অস্ত্রসহ চার জঙ্গিকে আটক করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. শাহজাহান (২৭) ও অজ্ঞাতনামা আরও একজন নিহত হন। ১৬ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিঝুম দ্বীপের সিডিএসপি বাজারের কাছে জলদস্যু হাসান বাহিনীর সঙ্গে কোস্টগার্ড সদস্যদের গোলাগুলি হয়। এ সময় হাসান বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ হাসানকে অস্ত্র, গুলিসহ আটক করা হয়।
২২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়ায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জাহাঙ্গীর নামে এক যুবক নিহত হন। র্যাবের দাবি, জাহাঙ্গীর একজন মাদক কারবারি। ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের করইবুনিয়া পাহাড়ের সীমান্তবর্তী এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে মাদক কারবারীদের গোলাগুলিতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন- আগস্টে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ৭টি, কারা হেফাজতে মৃত্যু ৫
সেপ্টেম্বরে কারা হেফাজতে যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা (৪২)। আগস্টের মাঝামাঝি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দিলে ১৮ আগস্ট থেকে ঢাকা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে মিডফোর্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজলুর রহমান তন্ময় ওরফে তাপস অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাবন্দি মো. খোরশেদ আলম (৬০) অসুস্থ হয়ে পড়লে কারারক্ষীরা তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারা হেফাজতে মো. আশরাফুল ইসলাম (৩৫) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আবুল বাশার শামীম (৪৯) নামে এক কয়েদিকে অচেতন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই প্রতিবেদনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, নির্যাতন ও বিক্ষোভে দমনে বল প্রয়োগের অভিযোগের সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়েছে। চলতি মাসে পুলিশ হেফাজতে এক জন, নির্যাতনের ফলে এক জন ছাড়াও এক জন ছাত্রকে বাসা থেকে তুলে নেওয়া ও বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর