হালদায় ফের মরা ডলফিন, জালে আটকে মৃত্যু ধারণা
৪ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে চারদিনের ব্যবধানে হালদা নদী থেকে মৃত অবস্থায় আরও একটি ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। জালে আটকা পড়ে শ্বাসবন্ধ হয়ে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার রামদাস মুন্সির হাট এলাকা থেকে ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা ডলফিনটি ভাসতে দেখে নৌ পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিচার্স ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডলফিনটি একেবারে পচে-গলে গেছে। কয়েকদিন আগেই এর মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধে ডলফিনটির কাছে যাওয়া যাচ্ছিল না। তবুও কষ্ট করে স্বেচ্ছাসেবকরা সেটি নদী থেকে তুলে ডাঙ্গায় আনে। ওজন এবং দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি।’
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পচে যাওয়ায় গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনটির শরীরের নানা জায়গায় এমনিতেই ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ধারণা, জালে আটকা পড়ে এর মৃত্যু হয়েছে। ডলফিনের লম্বা ঠোঁটে করাতের মতো দাঁত আছে। সেই দাঁত নদীতে জালে আটকে যায়। আধাঘণ্টার মতো আটকে থাকলে শ্বাসরোধ হয়ে ডলফিনের মৃত্যু হয়।’
হালদা নদীর পাড়েই মৃত ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া।
গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিরে বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়।
হালদা নদী থেকে চারদিন আগে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল। সোমবার একটিসহ এ নিয়ে মোট ৩১টি মৃত ডলফিন হালদায় পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয়মাসে হালদা নদীতে ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। এরপর চলতি বছরের ৬ জুলাই একটি মৃত ডলফিন পাওয়া যায় হালদা নদীর শাখা খালে।
এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে এ পর্যন্ত দুইটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সারাবাংলা/আরডি/এমও