বাংলাদেশ এখন আত্মনির্ভরশীল দেশ: নৌ প্রতিমন্ত্রী
৬ অক্টোবর ২০২১ ২১:৪২
ঢাকা: বাংলাদেশ এখন আত্মনির্ভরশীল দেশ, কোনো কিছুর জন্য কাউকে সংগ্রাম করতে হয় না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করে। ১৭ হাজার কোটি টাকা দিয়ে মাতারবাড়ী করে।
বুধবার (৬ অক্টোবর) দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয় পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও পুনর্ভবা টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আগে একটা কালভার্ট করার টাকা বাংলাদেশের ছিল না। আমাদের দারিদ্র্য বিক্রি করে ইউনূসরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু আমাদের দরিদ্রতা দূর হয়নি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে এসে জিয়া এরশাদ খালেদা জিয়ারা বাংলাদেশকে একটা ঋণগ্রস্ত দেশে পরিণত করেছিল। বাংলাদেশ এখন ঋণ দেয়। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেছে। রাজাপাকষে (শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী) আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছে, শ্রীলঙ্কার এই অর্থনৈতিক দুরবস্থায় সাহায্য করার জন্য। বাংলাদেশ সরকার সেখানে অর্থঋণ সাহায্য করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী সুদান, সোমালিয়াসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের শান্তি রক্ষায় কাজ করছে। আমরা এখন মঞ্জুরি দেই। সুদানকে বাংলাদেশ সরকার মঞ্জুরি দিয়েছে। যেটা কখনো শোধ করতে হবে না। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই জায়গায় গেছে। এটাই আমরা চেয়েছিলাম।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্সের টিকেট কেটে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন দেশে যেতে হতো। এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেদের বিমান নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে সাধারণ অধিবেশনে গেছেন। এটি গর্বের ব্যাপার।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যমুনা ইকোনমিক করিডোর করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। সেখানে স্যাটেলাইট সিটি হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় হবে। সেভাবে তিনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি ডেল্টা প্ল্যান করেছেন। ১০০ বছর কীভাবে বাংলাদেশ উন্নয়ন ধরে রাখতে পারবে সে উন্নয়ন পরিকল্পনা তিনি দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা এ বাংলাদেশকে ধ্বংস করে অন্ধকারে তলিয়ে দিয়েছিল। এখানে খুনি, অপরাধীরা নিরাপদ ছিল। লুটেরা, দুর্নীতিবাজরা এ বাংলাদেশকে শাসন- শোষণ করেছে। বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান তৈরি করে এই বাংলাদেশকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের চারণভূমি বানানো হয়েছিল। মানানীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে এই বাংলাদেশ আবার গর্ব ও অহংকারের জায়গায় চলে এসেছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী উপজেলার মাইনুল হাসান মহাবিদ্যালয়ের চারতলা আইসিটি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সুধী সমাবেশে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা সরকারের কাছ থেকে দায়িত্ব নেয়ার পরও আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, দরিদ্র দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে। দেশে অনেক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়. মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে। প্রতি উপজেলায় একটি করে স্কুল এবং কলেজ সরকারি করা হয়েছে। শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে। অনলাইনে শিক্ষা এবং বিনামূলে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের হত্যা নির্যাতনের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, ‘সে সময় শিক্ষকরাও রেহাই পায়নি। গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীকে তার বাসায় ঢুকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আহসান উল্লাহ মাস্টার ও শাহ এম এস কিবরিয়ার মতো সংসদ সদস্যদেরও হত্যা করা হয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমাবেশ করতে গিয়ে ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গভর্নিং বড়ির সভাপতি গোপেন্দ্র নাথ দেবশর্মা। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র সুবজার সিদ্দিক সাগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমা কান্ত রায়। সন্ধ্যায় প্রতিমন্ত্রী বোচাগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গা মন্দিরে শুভ মহালয়া উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
সারাবাংলা/একে