‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ’
১০ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৩৩
ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ব্যবসা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবেচনায় চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার। রফতানি পণ্যের কাঁচামাল, এক্সেসরিজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা রয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি।
রোববার (১০ অক্টোবর) বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই) ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর সেরা রিপোটিং অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ উপলক্ষে রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত থেকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকাস্থ চাইনিজ রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। এছাড়া বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী, বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা, ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী। এ সময় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান বিসিসিসিআই সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীটাই ব্যবসার ওপর চলছে। বৈশ্বিক রাজনীতি এখন অর্থনৈতিক রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে থাকেন, শুধু রাজনৈতিক কূটনীতিতে হবে না, ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কূটনীতি করতে হবে। সেই কূটনীতিতে যে সফল হবে, সেটাই প্রকৃত সফলতা।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের বিবেচনায় চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশীদার। বাংলাদেশ যত কাঁচামাল আমদানি করে তার বড় অংশই আসে চীন থেকে। এজন্য করোনা মহামারিতে সবাই দুশ্চিন্তায় পড়েছিল যে, কাঁচামাল সরবরাহের কী হবে। কাঁচামাল না পাওয়া গেলে সময়মত পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে না। বিশেষকরে তৈরি পোশাক শিল্প। এছাড়া এক্সেসরিজ খাতেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়। যদিও এক্সেসরিজে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। তারপরও চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। এছাড়া দেশের মধ্যে যত বড় বড় নির্মাণ কার্যক্রম আছে, তার অনেকক্ষেত্রেই চীনের অংশগ্রহণ রয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে রাজনীতির চেয়ে ব্যবসার গুরুত্ব বেশি।’
ঢাকাস্থ চায়নিজ রাষ্ট্রদূত লি জিমিং জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে চাইনিজ প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘চীন বৈশ্বিক উন্নয়নে কাজ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। সবুজ ও স্বাস্থ্যসম্মত বৈশ্বিক উন্নয়ন চায় চীন। মানব কল্যাণ এবং কাউকে পেছনে ফেলে নয়, এমন উন্নয়ন চায় চীন। এজন্য আঞ্চলিক উন্নয়ন ও বিভিন্ন উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশও চীনের এই বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ থেকে সহায়তা পাবে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে।’
বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির মহাসচিব শাহাজাহান মৃধা বেনু। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীনের উষ্ণতম অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক সৃষ্টি করাই বিসিসিসিআইয়ের মূল লক্ষ্য। এ ধরনের রিপোর্টিং সেই লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে।’
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে। মহামারি মোকাবিলায় করোনার ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করছে চীন। আশা করা যায়, বিসিসিসিআই এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেবে।’
বিসিসিসিআইয়ের যুগ্ম মহাসচিব আল মামুন মৃধা তার সমাপনী বক্তব্যে এই অ্যাওয়ার্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সাংবাদিকদের জন্য ফেলোশিপ চালু করা হবে বলে জানান।
উল্লেখ্য, প্রথমবার বিসিসিসিআই ও ইআরএফ যৌথভাবে এ ধরনের অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করল। এতে ইআরএফের অর্ধশতাধিক সদস্য প্রতিবেদন জমা দেন। এর মধ্য থেকে বাংলাদেশ চীনের সম্পর্কের বিভিন্ন খাতভিত্তিক ১০টি ক্যাটাগরিতে ১০টি রিপোর্টকে সেরা হিসেবে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। বিজয়ী রিপোর্টারদের ক্রেস্ট, সনদ ও ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম