সুবিধাবঞ্চিত ফুলহার গুচ্ছগ্রামবাসী, জর্জরিত নানা সমস্যায়
১১ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১৬
গাইবান্ধা: নানা সমস্যায় জর্জরিত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ফুলহার গুচ্ছগ্রাম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় বসবাসকারীরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি শুরু থেকেই সংস্কার না করায় চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পানি সংকটও এই গুচ্ছগ্রামবাসীর অনেক বড় সমস্যা। এত সমস্যার পরও সেখানে নতুন করে নির্মিত আরও ৬০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গুচ্ছগ্রামের যদি কোনো সমস্যা থাকে তা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নে ভূমিহীন, গরীব, দুঃস্থ, অসহায় মানুষের জন্য সরকার ফুলহার গুচ্ছগ্রামে ১৩০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ১০০টি ঘর বরাদ্দ পেয়ে ৩ বছর ধরে লোকজন বসবাস শুরু করে। বাকি ঘরগুলিতে লোক না থাকায় বর্ষা বৃষ্টিতে ঘরের মেঝের মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
অন্য ঘরগুলোতে বসবাসকারীদের সুবিধাও বাড়েনি। প্রায় ৬০০ জন মানুষ এখানে বসবাস করলেও পর্যাপ্ত নলকূপ নেই। যেসব নলকূপ রয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগ অকেজো, পানি ওঠে না। এছাড়াও পড়ালেখা করার জন্য ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পাঠশালা না থাকায় শিশুরাও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ফুলহার গুচ্ছগ্রামের মানুষ মারা গেলেও কবর দেওয়ার কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। আর মসজিদ রয়েছে গ্রাম থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে। বাধ্য হয়ে মুসল্লিরা পার্শ্ববর্তী গ্রামে নামাজ পড়তে যান। বসবাসের শুরু থেকেই স্থানীয়দের দাবি গুচ্ছগ্রামের পাশেই নদী তীরবর্তী যে খাস জমি রয়েছে সেখানে তাদের জন্য একটি মসজিদ ও কবর স্থান করে দেওয়া হোক।
বসবাসকারীরা বলছেন, গুচ্ছগ্রামে অনেক ঘর পরিত্যক্ত থাকলেও সেগুলোর সংস্কার না করে নতুন করে আরও ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলো বরাদ্দ না দেওয়ায় এবং লোকজন না থাকায় সেগুলোও ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কাটাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিক মাহমুদ গোলাপ বলেন, ‘ফুলহার গুচ্ছগ্রামে বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও তা সমাধান না করে নতুন করে আরও ৬০টি ঘর নির্মাণ করে সরকারি অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। অথচ ৩ বছর ধরে সেখানে বসবাসকারীরা নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে জীবনযাপন করছে। তাই তাদের সমস্যাগুলো আগে সমাধান করা দরকার। এ ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাঈদ জানান, ফুলহার গুচ্ছগ্রামের রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হযেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্য যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া বসবাসকারী মানুষের নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর আশ্বাসও দেন তিনি।
সারাবাংলা/এমও