পা হারানো রাসেলকে ৩৩ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিনলাইন পরিবহন
১০ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩৮
ঢাকা: রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা দিয়েছে পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন রাসেল সরকারের আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা।
তিনি জানান, হাইকোর্টের রায়ের পর ক্ষতিপূরণ হিসেবে চার কিস্তিতে ২০ লাখ দিয়েছে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ। রায়ের আগে উচ্চ আদালতের আদেশের পর রাসেলকে দুই দফায় ১০ লাখ টাকা এবং তার চিকিৎসাবাবদ ৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা দিয়েছিল গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা পেয়েছেন রাসেল।
২০২০ সালের ১ অক্টোবর গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরও ২০ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট বাস কোম্পানিকে তিন মাসের মধ্যে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বাকি টাকা কিস্তিতে দেওয়ার আদেশ থাকলেও তা স্থগিত করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপরে আপিল বিভাগের নির্দেশার আলোকে চূড়ান্ত রুল নিষ্পত্তি করে ২০ লাখ টাকা দিলে সব মিলিয়ে রাসেল পাওয়ার কথা ৩৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তারই আলোকে এ অর্থ পরিশোধ করলো গ্রিনলাইন।
গত বছরের ১ অক্টোবর এ বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তিন মাসের মধ্যে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে চার কিস্তিতে এ টাকা শোধ করে গ্রিনলাইন পরিবহন।
২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল গ্রিন লাইন পরিবহনের ধাক্কায় মারাত্মক আহত হন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পর্যায়ে তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। তার আরেক পায়ের অবস্থাও ভালো নয়।
এ অবস্থায় রাসেলের পক্ষ হয়ে তাকে আইনগত সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন গাইবান্ধার একই এলাকার বাসিন্দা জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
রাসেল সরকারের জন্য কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন এই আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। পরে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ আদালত ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।
পরে ওই বছরের ১০ এপ্রিল আরেক আদেশে হাই কোর্ট প্রতিমাসে ৫ লাখ টাকা করে দিতে নির্দেশ দেয় গ্রিনলাইনকে। ওই নির্দেশের পর একই বছরের জুলাই পর্যন্ত তিন দফায় মোট ১৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা দেয় গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ। পরে আপিল বিভাগ ওই আদেশ স্থগিত করে দেয়।
এ অবস্থায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া প্রশ্নে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি হয়। এই বিষয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর সেই রায়ে রাসেলকে আরও ২০ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় হাইকোর্ট।
আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা জানান, আমরা মোট ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। আর চিকিৎসাবাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এখন যেহেতু কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি চলছে, তাই আগামী ২১ অক্টোবর কোর্ট খোলার পরপরই ব্যাংক স্টেটমেন্টটি জমা দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও