শান্তির প্রতীক নৌকা হেরে গেলে দেশ থাকে অন্ধকারে: নৌ প্রতিমন্ত্রী
১১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:১৩
মেহেরপুর: শান্তি ও আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক নৌকা যখনই হেরে যায়, বাংলাদেশ তখন অন্ধকারে তলিয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, যখনই আমরা নৌকা হারিয়ে ফেলেছি, তখনই বাংলাদেশ অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। দরিদ্র থেকে আরও দরিদ্র হয়েছি, সার্বিক কোনো উন্নয়ন হয়নি। খুনিদের নিরাপত্তা দিয়ে বিকৃত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।
রোববার (১০ অক্টোবর) রাতে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ পর্বের আলোচনার বিষয় ছিল ‘নদী, নৌকা ও বঙ্গবন্ধু’।
নৌ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ কিছু না কিছু পায়। ১৯৫৪ সালে মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছিল, নৌকার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। সে কারণে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পর সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালে স্বাধীনতার পথ তৈরি করে দিয়েছিল এই নৌকা প্রতীক।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘নৌকার কারণেই ১৯৯৬ সালে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বিকৃত সমাজ ব্যবস্থা থেকে দেশ স্বাভাবিক ধারায় ফিরে এসেছে। পাঁচবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা সুষ্ঠু ধারায় চলে এসেছিল। কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জন করি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়। ২০০১ সালে আবার নৌকাকে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ বিভীষিকাময় পথে যাত্রা শুরু করে।’
অগ্রসরমান বর্তমান বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকের যে বাংলাদেশ, নৌকা প্রতীক কোথায় নিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী আজ (রোববার) রূপপুরে পরমাণু চুল্লি স্থাপনের উদ্বোধন করেছেন। সমগ্র দেশ আজ আবেগতাড়িত। আমরা পারমাণবিক যুগে পা দিলাম। নৌকার জন্যই এ অসাধারণ প্রাপ্তি।’
তিনি বলেন, ‘আগে ঋণের জন্য ধরনা দিতে হতো। প্রতিনিধিরা বিভিন্ন দেশে যেত কিছু চাওয়ার জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা এখন ঋণ দেই। এটা শুধু নৌকার সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বিশ্বব্যাংকের পক্ষে ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ নিলেন। আজকে পদ্মাসেতু বাস্তব রূপ। এটি সম্ভব হয়েছে নৌকার সঙ্গে জনগণ আছে বলেই। নৌকার জন্যই আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। রিজার্ভ বেড়েছে। এ সব কিছুর প্রেরণা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ।’
নদী নৌকা ও বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করেছি বলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের মাঝে মুজিব চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত বাংলাদেশকে ধরে রাখতে নদীকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শতবর্ষী ডেল্টা প্ল্যান দিয়েছেন। এ নদীগুলো বাংলাদেশের বিজয়ের ঢাল ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এ নদীগুলো সহায়ক ছিল।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেই তিনি বলেছেন নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। নদীগুলো বাংলাদেশের শিরা-উপশিরা; এ কথাগুলোই বঙ্গবন্ধু বলেছেন।’
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মুনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘মুজিববর্ষে শতঘণ্টা মুজিবচর্চা’ কর্মসূচির প্রধান উপদেষ্টা জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, লেখক ও গবেষক ড. রতন সিদ্দিকী। এ সময় জেলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
সারাবাংলা/একে