শিল্পকলার ডিজির ২৬ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে দুদক
১৫ অক্টোবর ২০২১ ০৯:১৬
ঢাকা: নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সাম্প্রতিক সময়ে উঠেছে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে অনিয়মের মাধ্যমে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার একটি অভিযোগও রয়েছে। এই নাট্যব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগে সংসদীয় কমিটির সুপারিশে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। আর্থিক অনিয়মের এই অভিযোগটি আমলে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)। যাচাই-বাছাই কমিটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কমিশন এ অভিযোগ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চুক্তিভিত্তিক একজন কর্মকর্তাকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে দেশের জাতীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় এক যুগ ধরে মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রেও অভিযোগের তীর তার দিকেই।
দুদক সূত্র বলছে, গত ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হলে ওই দিনই নতুন আদেশ জারির মাধ্যমে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন লাকী। তার আদেশে নতুন সচিব না আসা পর্যন্ত মাহবুবাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয় আদেশে।
দুদকে জমা হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত শিল্পকলার সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবা। এ সময়ে শিল্পকলার মহাপরিচালক লাকী সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া মাহবুবাকে দিয়ে প্রায় ২৬ কোটি টাকার বিভিন্ন চেক সই করিয়ে নেন। অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুনের তারিখেই এসব সই করা হয়। অর্থবছরের মধ্যে সরকারি বরাদ্দের অর্থ খরচ দেখাতে মহাপরিচালক এমন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সৈয়দা মাহবুবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখন কিছু বলতে পারব না। আমি এখন একটি মিটিংয়ে আছি। আমি কিছুই বলতে পারব না।’ পরবর্তী সময়ে আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি সারাবাংলা।
এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ সদস্য রামেন্দু মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, আমি যতটুকু জানি— এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত করছে। আমরা চাই সবকিছু যেন নিয়মের মধ্যে চলে। কেউ অপরাধ করলে তাকে তার ফল ভোগ করতে হবে। তবে দুর্নীতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে জানতে একাডেমির মহাপরিচালকের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান সারাবাংলাকে বলেন, তিনি (শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক) একজন সরকারি কর্মকর্তা। আর সরকারি অর্থ সংক্রান্ত বিষয় বলে আমরা এটিকে দুর্নীতির শিডিউলভুক্ত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছি। এছাড়া দুদকের যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। এটি নিয়ে পরবর্তী সময়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কমিশনে উপস্থাপন করার পর সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
সারাবাংলা/এসজে/টিআর