বান্দরবানে প্রবারণা পূর্ণিমার ২ দিনব্যাপী উৎসব শুরু
২০ অক্টোবর ২০২১ ২৩:২৪
বান্দরবান: বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের দুই দিনব্যাপী ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ (প্রবারণা পূর্ণিমা) উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ উৎসব শুরু হয়।
প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে পাহাড়ি পল্লিতে বইছে আনন্দের জোয়ার। সর্বত্র বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রথযাত্রা সহযোগে শহর প্রদক্ষিণ ও গভীর রাতে শঙ্খ নদীতে রথ উৎসর্গের মাধ্যেমে শেষ হবে প্রবারণা পূর্ণিমা।
প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি লাইয়েচিং মারমা জানান, এটি আমাদের মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ২০ অক্টোবর রাত থেকে নানা অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে এবারও দুই দিনব্যাপী এ উৎসব পালন করা হবে। এ সময় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও মাস্ক পরে উৎসবে অংশ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
তিন মাস ধর্মীয় কাজ (বর্ষাবাস) শেষ করে শীল পালনকারীরা এই দিনে নিজ সংসারে ফিরে যান। এবং এই তিন মাস বর্ষাবরণের পর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে আনন্দের বার্তা বয়ে আনে এই প্রবারণা পূর্ণিমা। এই পূর্ণিমার দিনেই রাজকুমার সিদ্ধার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসদ্ধি গ্রহণ, গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল।
প্রবারণা শব্দের অর্থ আশার তৃপ্তি, অভিলাষ পূরণ এবং ধ্যান শিক্ষার সমাপ্তি বোঝায়। এই দিন মিলনের দিন। এই দিন পরকে আপন করার, দূরকে নিকট করার দিন। এই দিনে বৌদ্ধরা সব বিবাদ ভুলে একে অন্যকে সম্ভাষণ জানায় এবং মনের সমস্ত সংকীর্ণতা পরিহার করে অহিংসা মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মহামিলনের গান গায়।
এই দিনে মারমা সম্প্রদায়ের কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, দায়ক-দায়িকা ও উপাসক-উপাসিকারা নতুন জামা-কাপড় পরে বৌদ্ধ মন্দিরে সমেবেত হয়ে ভগবান বৌদ্ধের উদ্দেশে ফুল, পিঠা ও পিণ্ড দান করে থাকে। বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নানা রঙ্গের ফানুস বাতি উড়ানো, প্রতিটি বৌদ্ধ মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন ও ছোঁয়াইং (খাবার) দানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় বৌদ্ধ সম্প্রদায় প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব পালন করে।
সারাবাংলা/পিটিএম