রেলের বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৯:১০
লালমনিরহাট: রেলওয়ের টিকিট বিক্রির প্রায় ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট রেল বিভাগের মিশুক আল মামুন নামে বুকিং সহকারীর (গ্রেড-১) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারি অর্থ আাত্মসাতের মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) অর্থ আত্মসাতের মামলায় রেল পুলিশ মামুনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে লালমনিরহাট রেল বিভাগে চলছে তোলপাড়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের অধীনস্ত কাউনিয়া স্টেশনের বুকিং সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার চর বজরা গ্রামের মনছুর কাদেরের ছেলে মিশুক আল মামুন। গত ১০ আগস্ট থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত রেলওয়ের আয়ের ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা একমাস বিশ দিন পর্যন্ত জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে রেল কর্তৃপক্ষ তাকে তাৎক্ষণিক ডেকে টাকা ফেরতের জন্য তাগিদ দেয়।
মামুন টাকা ফেরতের সময় নিয়ে মুচলেকা দেন। নির্ধারিত সময়সীমার পরও টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় সোমবার অভিযোগ দায়ের করেন জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সহির উদ্দিন। ওইদিনই তাকে পুলিশে সোপর্দ করে রেল কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কাউনিয়া স্টেশন মাস্টার বাবু আল রশিদকে।
কাউনিয়া স্টেশন মাস্টার বাবু আল রশিদ বলেন, ‘স্টেশনের বুকিং সহকারী হিসেবে কর্মরত মিশুক আল মামুন নিজ দায়িত্বে যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি ও মালামাল পরিবহনের ভাড়া বাবদ আদায় করা টাকা একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে নির্দিষ্ট ব্যাগে ভরে সিলগালা করে রেলওয়ের নির্দিষ্ট ট্রেনে পশ্চিমাঞ্চল জোনের পে অ্যান্ড ক্যাশ অফিসে পাঠিয়ে আসছে। পরবর্তীতে টাকা না পাঠিয়ে আত্মসাৎ এবং লিখিত জবানবন্দিও দিয়েছেন মিশুক আল মামুন। টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।’
স্টেশনে কর্তব্যরত মাস্টার জেনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমিও দীর্ঘদিন থেকে চাকরিতে একই সঙ্গে আছি। বাবু আল রশিদ সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। তার প্রমাণ মিশুক আল মামুনের ঘটে যাওয়া ঘটনা। তিনিই টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।’
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের ম্যানেজার শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি বিষয়টি কর্মকর্তা মারফত নিশ্চিত হই এবং অভিযুক্তকে পুলিশে সোপর্দ করি। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। বিষয়টি রাজশাহীর জোনাল অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘রেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামুনকে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে দুদকে মামলা হস্তান্তরের আবেদন করা হয়েছে। এখন মামলাটি দুদক তদন্ত করবে।’
সারাবাংলা/এমও