‘যতদিন শ্রেণি শোষণ থাকবে, ততদিন বিপ্লবেরও প্রয়োজন হবে’
৩০ অক্টোবর ২০২১ ২২:৩৮
ঢাকা: দুনিয়ায় যতদিন শ্রেণি শোষণ আর শ্রেণি নিপীড়ন থাকবে ততদিন শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের বিপ্লবেরও প্রয়োজন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। নতুন সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক, মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে এই বিপ্লবী পরিবর্তন হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে ঐতিহাসিক প্যারি কমিউনের ১৫০ বছর উপলক্ষে তার লিখিত ‘প্যারি কমিউনের ১৫০ বছর- তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বইয়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
এ বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, ‘দুনিয়ায় যতদিন শ্রেণি শোষণ আর শ্রেণি নিপীড়ন থাকবে ততদিন শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের বিপ্লবেরও প্রয়োজন হবে। পুঁজিবাদের নিষ্ঠুর অমানবিক নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ যুগের আগুয়ান বিপ্লবী শ্রেণি-শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে রাষ্ট্র-বিপ্লবও দরকার হবে। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণি কেবল শোষণ-বঞ্চনা থেকে নিজেকে মুক্ত করবে না,তারা নির্যাতিত-নিপীড়িত, শোষিত ও অবদমিত সমাজের সকল অংশকে মুক্ত করবে। তারা মুক্ত করবে অবরুদ্ধ অচলায়তনের গোটা সমাজকে। এই বিপ্লবী পরিবর্তন হবে এক নতুন সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে।’
তিনি বলেন, ‘দুনিয়াজুড়ে করোনা মহামারি আরও একবার প্রমাণ করেছে যে, নিছক মুনাফাকেন্দ্রীক অমানবিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় মানুষের জীবন ও তার মানবিক বিকাশ কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। ধনতান্ত্রিক উন্নয়ন মডেল কেবল মুনাফা বোঝে,মানুষ বোঝে না। মানুষ তার কাছে উৎপাদনের একটি উপকরণ মাত্র। আজ ১৫০ বছর পরও প্যারি কমিউন বিশ্বের সব শ্রমজীবী-মেহনতিদের অধিকার আর মুক্তি অর্জনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।’
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে কালের দাবি প্রকাশনার প্রধান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বহ্নিশিখা জামালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মির্যা মাসুদ হাসান, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রমিকনেতা রাজেকুজ্জামান রতন, লেখক – গবেষক ওমর তারেক চৌধুরী, আলতাফ পারভেজ, অনিন্দ্য আরিফ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডঃ অভিনু কিবরিয়া ইসলাম।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,প্যারি কমিউন মাত্র ৭২ দিন টিকে থাকতে পারলেও তা নিজেকে পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসাবে হাজির করেছিল। মূলত প্যারি কমিউন ছিল রুশ বিপ্লবেরই এক অসাধারণ রিহার্সাল। প্যারি কমিউন প্রতিনিধিত্বশীল ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সমাজতান্ত্রিক ও গণতন্ত্রের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।
তারা বলেন, প্যারি কমিউন পরবর্তী গত দেড়শত বছরে শ্রমিকশ্রেণির গঠন ও চরিত্রে অনেক নতুন বৈশিষ্ট যুক্ত হলেও মানব সভ্যতা বিকাশে শ্রমিকশ্রেণিই এখনো প্রধান ভরসা। এই শ্রমজীবী-মেহনতিরাই একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুনিয়ার দেশে দেশে নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে রাষ্ট্র-বিপ্লবের কাজ এগিয়ে নেবে, শ্রমিকশ্রেণিসহ মানুষের জীবন, তাদের অধিকার ও মুক্তি নিশ্চিত করবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি বিপ্লব শ্রেণি শোষণ সাইফুল হক