ড্যাপ বাস্তবায়ন হলে ভবনের আয়তন কমবে, দাম বাড়বে ফ্ল্যাটের
৩১ অক্টোবর ২০২১ ২১:২৭
ঢাকা: প্রস্তাবিত ড্যাপ (২০১৬-৩৫) এবং সংশ্লিষ্ট খসড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০২১ বাস্তবায়িত হলে ভবনের আয়তন বর্তমানে যা অনুমোদন হচ্ছে তা থেকে কমপক্ষে ৩৩ থেকে ৫৩ শতাংশ কমে যাবে। ফলে বেড়ে যাবে ফ্ল্যাটের দাম। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন সাধারণ ক্রেতা ও জমির মালিকসহ আবাসন ব্যবসায়ীরা। যা নাগরিকদের মাঝে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
রোববার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই মতামত তুলে ধরেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল)। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা। অনুষ্ঠানে রিহ্যাব এর ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ নজরুল ইসলাম (দুলাল), ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ লায়ন শরীফ আলী খানসহ বিভিন্ন পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নির্মিতব্য ভবনের জন্য কমন ফ্যাসিলিটি, দাফতরিক ও অন্যান্য প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যয় একই থাকার কারণে ফ্ল্যাটগুলোর মূল্য নূন্যতম ৫০ শতাংশ বাড়বে। ফলে ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতা যৌক্তিকভাবে কমে যাবে। এতে আবাসন সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা ব্যহত হবে। এছাড়াও ব্যাপকভাবে ভবনের আয়তন হ্রাসের ফলে সিরামিক, টাইলস, ইলেকট্রিক কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ, রড ইন্ডাস্ট্রিজ, সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, পাথর, বালি, পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রিজসহ অন্যান্য ২৬৯টি লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিজগুলো গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে। সর্বোপরি আবাসন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি অশনি সংকেত রূপে দেখা দেবে।’
রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ মোতাবেক ২০ফিট রাস্তা সংলগ্ন ৫ কাঠা জমিতে সর্বনিম্ন গ্রাউন্ডফ্লোরসহ আট তলা ফ্লোর বিশিষ্ট ভবনে মোট ১৩ হাজার ৫০০ বর্গফুট নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত। প্রস্তাবিত বিধিমালা মোতাবেক একই জমিতে পাঁচ তলা ফ্লোর বিশিষ্ট নয় হাজার বর্গফুট ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যাবে। ২০ ফুটের চেয়ে ছোট রাস্তার ক্ষেত্রে নির্মিতব্য ভবনের উচ্চতা তিন থেকে চার তলার বেশি হবে না এবং আয়তন উদ্বেগজনক ভাবে কমে যায়। এরকম চিত্র প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই।’
প্রস্তাবিত বিধির নির্দেশনার কারণে জমির মালিকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেবে উল্লেক করে আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘নির্মাণযোগ্য ফ্ল্যাট সংখ্যা কমে আসার কারণে বাসা ভাড়া সীমাহীনভাবে বাড়বে এবং বিভিন্ন স্থানে সাবলেট সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। যা নগরীতে একটি অ-স্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করবে। অন্যান্য নগরীতে ৫০ থেকে ৫৩ শতাংশ ভবনের আয়তন হ্রাস করার কারণে আবাসনের চাহিদা মেটাতে ফসলি জমিতে ভবন তথা বাসাবাড়ির নির্মাণের একটি প্রবণতা সৃষ্টি হবে। ফলে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তার সংকট দেখা দেবে। যা হবে জাতির জন্য একটি বিরাট বিপর্যয়।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম