বাংলাবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ১২তলা ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ
১ নভেম্বর ২০২১ ২৩:০৪
ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের বুকস অ্যান্ড কম্পিউটার মার্কেটে ঝুঁকিপূর্ণ ১২তলা ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ার ব্যর্থতাকে কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৩১ অক্টোবর) আদেশ দেন। আদেশের পূর্ণাঙ্গ লিখিত অনুলিপি প্রকাশ হয় আজ। সোমবার (১ নভেম্বর) রিটের পক্ষের আইনজীবী এনায়েত করিম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া ও এনায়েত করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজধানীর বাংলাবাজার এলাকার ৩৮/৩ পি.কে. রায় রোডে আট কাঠা জমির ওপর গড়ে উঠেছে বুকস অ্যান্ড কম্পিউটার মার্কেট। ১২তলা বিশিষ্ট ওই মার্কেটের প্রথম তলা থেকে পঞ্চম তলায় রয়েছে ২৫০টিরও বেশি বই আর কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দোকান। ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এরপরই রাজউক সরেজমিন পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এবং বইয়ের গোডাউন অপসারণ ও ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি টিম কাঠামোগত বিভিন্ন ত্রুটির কথা উল্লেখ করে ভবনটির ডিটেল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট (ডিইএ) করার পরামর্শ দেন। কিন্তু পাঁচ বছরেও মার্কেটের বইয়ের দোকানগুলো অপসারণ হয়নি।
উল্টো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বুয়েটের নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে ভবনের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ তলার নির্মাণকাজ শেষ করে বাকি কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় দুই ফ্ল্যাট মালিক প্রথমে রাজউকে আবেদন করেন। সেখানে সাড়া না পেয়ে তারা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটকারীরা হলেন এমদাদুল হক ও কামাল হোসেন।
এনায়েত করিম জানান, ঢাকার সূত্রাপুরের ৩৮/৩ পি.কে. রায় রোড বাংলাবাজারের বুকস অ্যান্ড কম্পিউটার মার্কেটটি মূলত নয় তলার অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে রাজউক নিরাপত্তার স্বার্থে সবধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ এবং ভবনটির ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেন। রাজউকের এ নির্দেশনার পর নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও কিছুদিন পরই ‘কাজ চালাতে বাধা নেই’ মর্মে বুয়েটের কিছু রিপোর্ট ফ্ল্যাট মালিকদের দেখানো হয়। এমনকি ভবনটি ১২তলা পর্যন্ত নির্মাণে রাজউকের অনুমোদনের নকশা দেখানো হয়।
পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নকশাটি ছিল ভুয়া। তখন রিটকারীরা রাজউকে আবেদন করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে দ্রুত ভবনের সবধরনের নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম