কর্নিয়া সমস্যায় বছরে অন্ধত্ব ৪০ হাজার মানুষের
২ নভেম্বর ২০২১ ২৩:৪৮
ঢাকা: দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার মানুষ কর্নিয়াজনিত সমস্যার কারণে অন্ধত্ব বরণ করে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে সবাইকে কর্নিয়াদানের আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ‘এ’ ব্লকের অডিটোরিয়ামে জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিএসএমএমইউতে আমরা কর্নিয়া ব্যাংক উদ্বোধন করেছি। সেখানে মাত্র ৪ হাজার ১০০টি কর্নিয়া পাওয়া গেছে, যেখানে বছরে ৪০ হাজার মানুষ কর্নিয়া সমস্যায় অন্ধত্ব বরণ করে। কর্নিয়ার স্বল্পতা দূর করতে সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে রক্তদানে অনেক সক্ষমতা এসেছে। রক্তদানের মাধ্যমে আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি। দানে বাড়ে, কখনোই কমে না। সরকার ব্লাড ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে। আরও ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম হয়েছি। আজ আমাদের দেশে মাত্র তিন জন মৃত্যুবরণ করেছেন, যেখানে উন্নত দেশগুলোতে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন সকল জেলা হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন আছে। আইসিইউ সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এসব কারণেই করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবুও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা স্কুলের শিশুদেরও ভ্যাকসিন দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সন্ধানীর শুরু ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। রক্তদানে মানুষকে সচেতন করতে সন্ধানী কাজ করেছে। তেমনই চক্ষুদানের বিষয়েও মানুষকে সচেতন করতে হবে। বাইরের দেশে মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর স্বজনদের মোটিভেট করে অর্গান সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশের সন্ধানীর সদস্যদের সে কাজ করতে হবে। আমরা আশা করি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সবসময় সন্ধানীর পাশে পাব।
ডা. দীপু মনি বলেন, এখন আর রক্তের জন্য হাহাকার করতে হয় না। তবে এখনো চক্ষুদানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি আমরা। আমরা এখন মূলত বেওয়ারিশ লাশ থেকে চক্ষু পেয়ে থাকি। এর কারণও আছে। যারা মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেছেন, তারা অধিকাংশই তরুণ। আমরা তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। বিশ্ব মহামারিতে আমাদের অবস্থা উন্নত দেশগুলোর থেকেও ভালো। ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও প্রয়োগে সরকার সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। ভ্যাকসিন নিয়ে দেশে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, মৃত্যুর পর চোখ কোনো কাজে লাগে না। এটা সবাইকে বুঝাতে হবে। রক্তদানে দেশের মানুষ যেভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসছে, চক্ষুদানেও তেমন পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। সন্ধানী এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব মো. আলী নূর ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এছাড়া বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাতসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
বিএসএমএমইউ আই ব্যাংক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক