বাংলাদেশের শ্রমমানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে: আইনমন্ত্রী
৭ নভেম্বর ২০২১ ১৯:৩২
ঢাকা: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে শ্রমমানের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত রোডম্যাপের বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলছে। সরকার শুরু থেকেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এ রোডম্যাপ বাস্তবায়নে কাজ করছে। শ্রমখাতে বিরাজমান ছোটখাট বাধা দূর করার জন্য সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ফলে বাংলাদেশের শ্রমমানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
রোববার (৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির ৩৪৩তম সভায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এদিন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জাননো হয়েছে।
আইএলও’র সভায় বাংলাদেশে শ্রমমানের অধিকতর উন্নয়নে ২০২১-২০২৬ সময়কালে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত রোডম্যাপের বাস্তবায়ন অগ্রগতি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। চলতি মাসের এক তারিখ থেকে ভার্চুয়াল ফ্লাটফর্মে আইএলও’র গভর্নিং বডির এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই সভা চলবে।
আইএলও-কে আশ্বস্ত করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যেই জবরদস্তি-শ্রম সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-২৯ এর প্রটোকল অনুসমর্থনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। এছাড়া শ্রমসাধ্য কাজে নিয়োগের ন্যূনতম বয়স সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৩৮ অনুমোদনের বিষয়ে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে সহযোগিতা করার জন্য শ্রম অধিদফতরের প্রতিটি অফিসে প্রি-অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্পখাতেও ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ২০১৩ সালের ১৩২টি থেকে বেড়ে ২০২১ সালে ১০৪৫টিতে উন্নীত হয়েছে। এ বছর ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের সফলতা প্রায় ৯০ শতাংশ।’
শ্রমমান পরিদর্শনের বিষয়ে তিনি জানান, শ্রম পরিদর্শকের ৮৯টি পদে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জনবল ও অর্থ বরাদ্দসহ কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদফতরকে দ্বিতীয় ধাপে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। শ্রম পরিদর্শকদের পেশাকে আকর্ষণীয় করার জন্য পদোন্নতির লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ে পদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও পদোন্নতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদফতরের ২৩টি কার্যালয়কে লেবার ইন্সপেকশন ম্যানেজমেন্ট এপ্লিকেশন (লিমা)-এর আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার জাতীয় পেশাগত সেইফটি কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করেছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বর্তমানে কারখানা পর্যায়ে ছয় হাজারের বেশি সেফটি কমিটি কাজ করছে। অধিকিন্তু শ্রমিকদের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদফতর এবং বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে হেল্পলাইন চালু করেছে।’ তিনি বলেন, ‘জুন ২০২০ হতে জুলাই ২০২১ সময়ে অনেক শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে; যার মধ্যে ৪৫ শতাংশ নারী শ্রমিক।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী, জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার, কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইউএন) সামিয়া আনজুম প্রমুখ এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম