খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে খুন
৮ নভেম্বর ২০২১ ১৯:২৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ফুটবল খেলার সময় মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন তার ভাইও।
সোমবার (৮ নভেম্বর) বিকেল সোয়া চারটার দিকে নগরীর খুলশী থানার আমবাগান এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত মো. হানিফ (২১) নগরীর আমবাগান শহীদ মিনার কলোনির বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিনের ছেলে। বাসা নগরীর আমবাগান শহীদ মিনার কলোনিতে। তিনি পেশায় টাইলস শ্রমিক ছিলেন। আহত হয়েছেন তার বড় ভাই মো. অনিক (২৫)।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হানিফের বন্ধু মো. মামুন সারাবাংলাকে জানান, বিকেলে তারা আমবাগান তরুণ সংঘের মাঠে ফুটবল খেলছিলেন। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী সোহাগ, সোহেল ও হাছান মাঠে গিয়ে হানিফকে ডেকে মাঠের অদূরে একটি মসজিদের আড়ালে নিয়ে যায়। খেলায় ব্যস্ত থাকায় হানিফের ভাই অনিক ও মামুনরা বিষয়টিতে তেমন নজর দেননি।
মামুন বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর হঠাৎ হানিফের চিৎকার শুনি। তখন অনিক দৌড়ে সেখানে যায়। আমরা গিয়ে দেখি, হানিফ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে কাতরাচ্ছে। অনিকও ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় আছে। আমরা সোহাগ, হাছান ও সোহেলকে দৌড়ে চলে যেতে দেখি। পরে আমরা দুজনকে একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে তুলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। আনার পথে হানিফ ট্যাক্সিতেই মারা যায়। অনিককে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। হানিফের বুকে ও হাতে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। অনিককে পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘হানিফকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। তার ভাই অনিককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
আমবাগান এলাকার মোহাম্মদ আমির নামে এক ব্যক্তি হত্যার নির্দেশদাতা দাবি করে মামুন বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে আমির ও হানিফের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। খুবই সামান্য ঘটনা। হানিফের সম্ভবত বিষয়টি মাথায়ও ছিল না। এর জের ধরে আমির সন্ত্রাসীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমির নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়। তাকে সবাই আমির ডাকাত হিসেবে চেনে। খুলশী থানায় তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা আছে।’
ঘটনাস্থলে থাকা নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার মো. শাহ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমির ও হানিফের বাসা একই এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে জেনেছি, তাদের মধ্যে পূর্বশত্রুতা ছিল। তিন দিন আগে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি পুরোপুরি এখনও জানতে পারিনি। ওই ঘটনার জের ধরে আমিরের নির্দেশে হানিফকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি।’
খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ শহীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে আমিরের নাম আমরা পেয়েছি। তাকেসহ যারা খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম