ঢাকা: যে কোনো মামলায় আসামিকে সর্বোচ্চ দণ্ড ফাঁসি দেওয়ার আগে অন্তত ১০ বার চিন্তা করি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
বুধবার (১০ নভেম্বর) আপিল বিভাগে এক মামলার শুনানিতে এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি।
চুয়াডাঙ্গায় একটি হত্যা মামলায় ঝড়ু ও মোকিম নামের দুই আসামির নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগে তাদের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে ওই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি বলে ৪ নভেম্বর জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি জানিয়েছেন, তাদের যে জেল আপিল ছিল, তা সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্টে শুনানি হয়ে ২০১৬ সালে ডিসমিসড হলো। এরপর রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদন করলেন, সেটিও খারিজ হলো।
আপিল এবং প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবে দণ্ড কার্যকর করা হলো। কিন্তু আইনজীবীর উচিত ছিল, জেল আপিলের সঙ্গে নিয়মিত আপিল ট্যাগ করে উপস্থাপন করা। তাহলে এ সমস্যা হতো না।
শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই কোর্টের ওপর এমন একটা ব্লেইম (অভিযোগ) আসে। এটা বিরাট বিব্রতকর কোর্টের জন্য। আমরা প্রত্যেকটা ফাঁসি দেওয়ার আগে ভালো করে দেখি। ফাঁসি দেওয়ার আগে আমরা কম করে হলেও ১০ বার চিন্তা করি।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে এখনও সবকিছু ডিজিটাল হয়নি। ডিজিটাল হলে সঙ্গে সঙ্গে ডিটেক্ট করা যেত যে, কোন মামলার কোনটা থেকে কোনটা এসেছে। কিন্তু আমাদের এখানে তো ডিজিটাল হয়নি, এটিই সমস্যা।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, ‘আমাদের এই ক্ষেত্রে একটু চাওয়া হলো, আমাদের হয়ত আরও সতর্ক হতে হবে। এ বিষয়ে একটা গাইডলাইন দিলে ভালো হয়।’
এরপর আদালত ওই দুই আসামির নিয়মিত আপিল অকার্যকর বলে খারিজ করে দেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ বিষয়ে গাইডলাইন থাকবে বলে জানিয়ে দেন আদালত।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।