বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার আদলে হচ্ছে দুদকের ল্যাব
১১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪৬
ঢাকা: হুন্ডি, অর্থপাচার ও অবৈধ অর্থ লেনদেনসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দুর্নীতি দমনে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বছর দুই আগে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে থেকে অত্যাধুনিক এসব প্রযুক্তি নিয়ে আসা হয়েছে দুদকের ডিজিটাল ল্যাবে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে অত্যাধুনিক এই ল্যাবটির কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
কমিশন বলছে, অর্থপাচারসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ থেকে যায় মোবাইল ফোনে। আবার কখনো কখনো দুদকের জালে আটক হওয়ার অনেক দুর্নীতিবাজ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে দুর্নীতির তথ্য মুছে ফেলেন। তখন দুদকের পক্ষ সেই দুর্নীতি করা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা বা দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। ফলে তথ্য প্রমাণ না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না দুদক।
সূত্র আরও জানায়, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দুর্নীতি দমনে কাজ করা একাধিক সংস্থা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বছর দুই আগে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নেয় দুদক। এরপর কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে শুরু হয় ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরির কাজ। সম্প্রতি দুদকের ল্যাবে কম্পিউটার ফরেনসিক, মোবাইল ফরেনসিক, অডিও-ভিডিও ফরেনসিক প্রযুক্তি আনা হয়েছে। আর এই সব প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোনো তথ্য মুছে ফেলার পরও পুনরুদ্ধার করতে পারবে দুদক।
শুধু তাই নয়, এই সব প্রযুক্তি দুদকের যুক্ত হওয়ার ফলে মেসেজ-ইমেইল, অডিও-ভিডিও, ফোন লগ, যোগাযোগের তালিকা, ফোন আইএমআই, ওয়েবব্রাইজিং, জিও লোকেশন তথ্য, অ্যাপ ডেটা, ক্লাউড ড্রাইভে সংরক্ষিত ডেটা উদ্ধার করতে পারবে কমিশন। তবে এসব প্রযুক্তি কোনো দেশ থেকে আনা হয়েছে বা প্রযুক্তিগুলোর নাম কি- এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি দুদক।
দুদকের সাইবার ইউনিটের প্রধান রাজিব হাসানের একটি উচ্চ পর্যায়ের টিম আগামী মাসে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে বিদেশে যাবে। আর জানুয়ারিতে অত্যাধুনিক এই ডিজিটাল ল্যাবটি চালু করার আশা রয়েছে কমিশনের। এমনকি দুদকে মামলার জটসহ তদন্তে নতুন মাত্রা পাবে এই ফরেনসিক ল্যাব তৈরি হলে।
এ বিষয়ে দুদকের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার সারাবাংলাকে বলেন, এমন অনেক অ্যাপস আছে সেগুলোর ব্যবহার কিংবা তথ্য মুছে ফেলার পরও আমাদের পক্ষে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ার ফলে আমরা খুব সহজেই এসব তথ্য এখন উদ্ধার করতে পারব এবং দুর্নীতিবাজদের শনাক্ত করার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে যেসব প্রযুক্তির প্রয়োজন সেগুলো আমরা এনেছি। সেই সব প্রযুক্তি এখন কাজ করার জন্য তৈরি রয়েছে। এই ধরনের প্রযুক্তি অপরাধীদের শনাক্ত এবং ধরার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
সারাবাংলা/এসজে/এনএস