‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে দায় আ.লীগকেই নিতে হবে’
১৮ নভেম্বর ২০২১ ১৫:৪৩
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেছেন দলটির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। একইসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় আজীবন আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে বলেও হুশিয়ার করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এসব বলেন বিএনপির এই নেতা। এ সময় সংসদের সভাপতিত্বে ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ বিষয়ে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, অন্তত মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে দুই-একদিনের মধ্যে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। ম্যাডামের একটা কিছু হয়ে গেলে এর দায়ভার আজীবন আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় স্পিকার আমরা ছয়জন সংসদে আছি। আমার আওয়ামী লীগের বন্ধুরা বলেন, এটাই পার্লামেন্টের জন্য অলংকার। তাই সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই- আমরা যদি সত্যি সত্যিই পার্লামেন্টের অলংকার হয়ে থাকি, তাহলে পার্লামেন্ট অলংকার বিহীন করবেন না। যদি ম্যাডামের অবস্থায় চরমে চলে গেলে আমাদের দলীয় সিদ্ধান্তে এমনও হতে পারে। তাহলে হয়তো এই পার্লামেন্ট আমাদের থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এটাকে শর্ত দিচ্ছি না।
বগুড়া-৬ থেকে নির্বাচিত গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এর আগে স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে সুস্থ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। যা তাকে দিনে দিনে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাকে বিদেশে চিকিৎসার করোনার জন্য নেত্রীর পরিবার থেকে পাঁচবার আবেদন করা হয়েছে। দল থেকে বারবার আবেদন করা হয়েছে। আমাদের আবেদন অতি দ্রুত জামিন দিয়ে দু’একদিনের মধ্যেই বিদেশে চিকিৎসার জন্য ম্যাডামকে পাঠানো হোক।
তিনি আরও বলেন, আইনমন্ত্রী ৪০১ ধারা লম্বা বক্তব্য শুনেছি গতকাল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনলাম। সমস্ত দৈনিক পত্রিকার হেডলাইন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শপথ নিয়েছিলেন রাগ অনুরাগের বশবর্তী হবেন না। গতকালের ওনার বক্তব্য সেই শপথের ভাষার সাংঘর্ষিক।
জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি মাননীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্য শুনেছি। যা দু’দিন আগে বলেছি তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। আইনের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। আইন যা বলেছে সেই মুহূর্তে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে বাইরে রাখা হয়েছে।
সিরাজকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যেহেতু মাননীয় সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। তারা নির্বাচন করেছেন বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে। আমি বারবার একটা কথা বলছি বাংলাদেশের আইনের বই এ এটা নাই। ওনারা যদি আমাকে দেখাতে পারেন, তাহলে তো আমরা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বই দেখাতে পারবেন না, তাই বিবেচনা প্রশ্ন আসে না।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে মাননীয় সংসদ সদস্য যেসব শারীরিক তথ্য দিচ্ছেন তা আমি জানি। তাকে (খালেদা জিয়া) কিন্তু সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হচ্ছে। এখন সেই চিকিৎসায় কে সন্তুষ্ট, আর কে অসন্তুষ্ট সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু একজন সাজাপ্রাপ্ত, যার সাজা স্থগিত রেখে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে ৪০১ ধারায়। সেই ৪০১ ধারায় কোনো বিধান নাই একটি নিষ্পত্তিকৃত আবেদনকে আবার পুনর্বিবেচনা করার। আইনের ভিতরেই সুযোগ নাই। ওনারা আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারেন। কিন্তু আমার কিছু আসে যায় না, আমি আইন অনুযায়ী চলব।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আওয়ামী লীগ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া