Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাইকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২১ ২০:৫৩

৩ চুক্তির আওতায় সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাইকা

ঢাকা: বাজেট সহায়তাসহ দুই বিনিয়োগ প্রকল্পে ২৬৫ কোটি ডলার মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে জাপান আর্ন্তজাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। স্থানীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২২ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের ষষ্ঠ পর্ব ও ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানাজিট (মেট্রোরেল) প্রকল্পে এই ঋণের অর্থ ব্যয় করা হবে।

সোমবার (২২ নভেম্বর) সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে জাইকার এ সংক্রান্ত একটি ঋণচুক্তি ও একটি বিনিময় নোট সই হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলনকক্ষে ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও জাইকার চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ ইউহো হাওয়াকাওয়া দুই ঋণচুক্তিতে সই করেন। অন্যদিকে বিনিময় নোটে সই করেন ইআরডি সচিব ও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাকাও। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত অকৃত্রিম বন্ধু দেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালের ঐতিহাসিক জাপান সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়। বঙ্গবন্ধু সড়ক ও যমুনা নদীর ওপর রেল সেতু, ঢাকা শহরের মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল, মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট ও মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরসহ চলমান বেশ কয়েকটি আইকনিক মেগা প্রকল্পে জাপান সরকারের সম্পৃক্ততায় জাপান সরকার আমাদের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতার দাবিদার।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

তিনি বলেন, জাপান সরকার গত বছর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ৩২ কোটি মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা ঋণ দিয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বর্তমানে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স ইমার্জেন্সি সাপোর্ট লোন ফেজ-২’ সই হচ্ছে। এটি আনন্দের সংবাদ।

যে প্রকল্পের ঋণ

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যে দুইটি প্রকল্পের জন্য ঋণচুক্তি হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প। এই প্রকল্পের ষষ্ঠ ধাপের জন্য এই ঋণ দেওয়া হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৫ হাজার ৯৮৪ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের তহবিল (জিওবি) থেকে খরচ হবে ৪ হাজার ৯২৬ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা, জাইকা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ দশমিক ০৩ কোটি টাকা এবং সিপিজিসিবিএল দেবে ২ হাজার ১১৮ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ৪৯ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৫১ শতাংশ। জাইকা পর্যায়ক্রমে ঋণ সহায়তা দেবে এই প্রকল্পের জন্য।

ঋণচুক্তির আওতায় দ্বিতীয় প্রকল্পটি হলো ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানাজিট ডেভেলপমেন্ট (এমআরটি) তথা মেট্রোরেল। এমআরটি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-১, ২য় ট্রাঞ্চ) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই লাইন দু’টি অংশে বিভক্ত— বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো। প্রথম অংশ বিমানবন্দর রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার, মোট পাতাল স্টেশনের সংখ্যা ১২টি। এ রুটেই বাংলাদেশে প্রথম পাতাল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় তথা পূর্বাচল রুটের মোট দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার। সম্পূর্ণ অংশ উড়াল ও মোট স্টেশন সংখ্যা ৯টি। নতুন বাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ থাকবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫২ হাজার ৫৬১ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে খরচ হবে ১৩ হাজার ১১১ দশমিক ১১ কোটি টাকা, জাইকা দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ দশমিক ৩২ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। জাইকা পর্যায়ক্রমে ঋণ সহায়তা দেবে।

অনুষ্ঠানে বাজেট সহায়তাসহ দুইটি প্রকল্পের জন্য একটি নোট বিনিময় ও দুইটি ঋণ চুক্তি সই হয়

বাজেট সহায়তায় ঋণ

অন্যদিকে বাজেট সহায়তার আওতায় বিনিময় নোটের মাধ্যমে যে অর্থ জাইকা দেবে, সেটি ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস রেসপন্স ইমার্জেন্সি সাপোর্ট’-এর দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচিতে খরচ করা হবে। করোনা সংক্রান্ত কার্যকর স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাস্তবায়ন, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং করোনার অভিঘাতে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে সমর্থন দিতে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। এর আওতায় জাপান সরকার ৪০ বিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন (৩৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার) ঋণ সহায়তা দেবে।

ইআরডি জানায়, জাপান সরকারের ৪২তম ওডিএ ঋণ প্যাকেজের আওতায় এই ঋণ দেওয়া হবে। এর সুদের হার নির্মাণ কাজের জন্য শুন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। এছাড়া পরামর্শক সেবার জন্য শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ, ফ্রন্ট এন্ড ফি (এককালীন) শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। এ ঋণ ১০ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। বাজেট সহায়তা হিসেবে দেওয়া ঋণের বার্ষিক সুদের হার শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ, ফ্রন্ট এন্ড ফি বাবদ (এককালীন) শূন্য দশমিক ২ শতাংশ দিতে হবে। এছাড়া পরিশোধের সময় একই।

সারাবাংলা/জিএস/জেজে/টিআর

ঋণচুক্তি জাইকা জাপান সহযোগিতা সংস্থা টপ নিউজ নোট বিনিময় বাজেট সহায়তা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর