সাড়ে ৩ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ড্যানিশ ফুডস
২৩ নভেম্বর ২০২১ ২২:১০
ঢাকা: পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ড্যানিশ ফুডসের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর সময়ে প্রতিষ্ঠানটি এই পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে এরই মধ্যে ড্যানিশ ফুড ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা জমাও দিয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে সারাবাংলাকে এই ভ্যাট ফাঁকির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পারটেক্স গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠানটির ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের লেনদেন কার্যক্রম তদন্ত করা হয়। এসময় প্রতিষ্ঠানটি যেসব দলিল ও মূসক পরিশোধ সংক্রান্ত ট্রেজারি চালানসহ নথিপত্র দাখিল করেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। মূসক (মূল্য সংযোজন কর) আইনের ধারা, সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন ও সাধারণ আদেশ অনুসরণ করে এসব নথিপত্র তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।
ড. মইনুল খান জানান, প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে বিভিন্ন সেবা খাতের বিপরীতে উৎসে মূসক বাবদ ১২ লাখ ৬ হাজার টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরকারের ভ্যাট পাওনা ছিল ৩১ লাখ ৭৯ হাজার ২৭২ টাকা। এতে ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ২৭২ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ওপর ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয়েছে ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪৬ টাকা।
এছাড়া তদন্ত মেয়াদে বিজ্ঞাপনের বর্ধিত মূল্য, চা-এর জন্য টি পেপার কেনা, টি বক্সের বর্ধিত মূল্য, বাটারের বর্ধিত মূল্য, ওয়েলফারে ব্যবহৃত কার্টনের বর্ধিত মূল্য, নুডলসে ব্যবহৃত সিজনিং পাউডারের বর্ধিত মূল্য, গ্যাস ও সিঅ্যান্ডএফের বর্ধিত মূল্য এবং নুডলসে ব্যবহৃত কার্টনের বর্ধিত মূল্যের ওপর প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত রেয়াত নিয়েছে। এতে ড্যানিশ ফুডসের কাছে ৬৪ লাখ ২১ হাজার ৮০৬ টাকা ভ্যাট পাওনা ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ বাবদ কোনো টাকাই পরিশোধ করেনি।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর আরও বলছে, ৭.৫ শতাংশ উপকরণ মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত মূল্য ঘোষণা না দেওয়ায় বর্ধিত মূল্যের ওপর গৃহীত রেয়াত কর্তন বাবদ ৩ কোটি ৭০ লাখ ৮১ হাজার ১৩৮ টাকা পাওনা ছিল সরকার। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ১ কোটি ১১ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৪ টাকা সমন্বয় করায় অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ আদায়যোগ্য ছিল ২ কোটি ৫৯ লাখ ৬২ হাজার ৪৮৪ টাকা।
সব মিলিয়ে ড্যানিশ ফুডসের সর্বমোট অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬২ টাকা এবং এর ওপর প্রযোজ্য সুদ ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪৬ টাকা। সুদসহ প্রতিষ্ঠানটি কাছে পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর জানিয়েছে, এরই মধ্যে ড্যানিশ ফুডস অপরিশোধিত ভ্যাট তথা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ মেনে নিয়েছে। তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০৮ টাকা জমা দিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরকে সে তথ্য অবহিত করেছে।
সারাবাংলা/এসজে/টিআর