Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইভ্যালির লেনদেন ৩৮৯৮ কোটি টাকা, ব্যাংকে জমা ২ কোটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ নভেম্বর ২০২১ ২১:০৪

ফাইল ছবি

ঢাকা: অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অর্থনৈতিক রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। লেনদেনের বিবরণী বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে চলতি বছরে ইভ্যালির অর্থনৈতিক লেনদেন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের ৬৭টি হিসাবে ৩ হাজার ৮৯৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে জমা প্রায় ১ হাজার ৯৫৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ও উত্তোলন হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এখন ইভ্যালির নিজস্ব হিসাবে স্থিতি আছে ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

আরও ১০টি হিসাব শনাক্ত হওয়ায় চলতি বছরের ১০ আগস্টে সিআইডির কাছে ৭৭টি (৬৭ ও ১০) হিসাবের তথ্য পাঠানো হয়েছে। কার কার নামে কখন এসব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে- তাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ বিষয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পলিসি কী, তা জানার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে সংশ্লিষ্টরা এ প্রতিবেদন জমা দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইভ্যালির সম্পর্কিত অর্থনৈতিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইভ্যালি ১৩টি ব্যাংকে তাদের ৬৭টি অ্যাকাউন্টে ৩৮৯৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে এই টাকা লেনদেন হয়েছে। তবে এখন ইভ্যালির নিজস্ব হিসেবে স্থিতি আছে ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ইভ্যালির অর্থ পাচার হয়েছে কি না সে বিষয়ে বিএফআইইউ কাজ চলছে বলে আদালতকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।’

এর আগে, আদেশ অনুযায়ী শুনানিতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি গত ১৬ নভেম্বর উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্টের গঠিত বেঞ্চ। ওইদিন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পলিসি কী, তাও জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে, গত ২০ সেপ্টেম্বর দেশের ই–কমার্স খাতের ভোক্তাদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে করা পৃথক তিনটি রিট করা হয়। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই তিন বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে জানাতে নির্দেশ দেন।

ই-কমার্সের গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

২৩ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জে কোটি কোটি টাকা আটকে থাকা ৩৩ জন গ্রাহক ডিজিটাল বা ই-প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তৈরির জন্য অর্থনীতিবিদ, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, ব্যবসায়ী ও অন্য অংশীজনদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেন। তাদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

২২ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুজন গ্রাহকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব আরেকটি রিট করেন।

রিটে কোনো ব্যক্তি বা সরকারি কর্তৃপক্ষের অবহেলা বা ব্যর্থতায় ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, দারাজ, কিউকম, আলাদিনের প্রদীপ ও দালাল প্লাসের মতো পরিচিত বাজার থেকে পণ্যের জন্য লাখ লাখ গ্রাহকের ক্ষতি ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে এক সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। ওই তিন রিট একত্রে শুনানি নিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত এসব আদেশ দেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

ইভ্যালি প্রতিবেদন লেনদেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর