Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে পৌরসভার সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ নভেম্বর ২০২১ ১৯:২৪

রাজশাহী: কাটাখালী পৌরসভার রাজস্ব খাতের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে। পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলরের অভিযোগ, তহবিলে টাকা থাকলেও মেয়র আব্বাস পৌরসভার কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩৬ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখেছেন। অর্থ আত্মসাতের কথাও তিনি গর্ব করে বলে বেড়ান।

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে পৌরসভা ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলররা এ অভিযোগ করেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ১২ জন কাউন্সিলরের জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে অপসারণে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়। রাতেই সেটি জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কাটাখালী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্জুর রহমান। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ের পৌরসভার ফান্ডের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ছিল। এখন চা খাওয়ার টাকাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ করে পৌরসভার ফান্ডের টাকা গায়েব হয়ে গেছে। বিষয়টি দ্রুত তদন্তের দাবি জানান তিনি।

আরও পড়ুন- কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাসকে জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি

মঞ্জুর রহমান বলেন, করোনাকালীন অনুদান দেওয়ার জন্য কাটাখালী বাজারের কাপড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেন মেয়র আব্বাস। কিন্তু সে টাকা কাউকে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। কারোনাকালে চা ব্যবসায়ীদের অনুদান দেওয়ার নামে কয়েক লাখ টাকা পৌরসভার ফান্ড থেকে হাতিয়ে নেন মেয়র আব্বাস। কিন্তু কোনো চায়ের দোকানদার করোনাকালে অনুদান পেয়েছেন— কোনো কাউন্সিলর সেটি বলতে পারবেন না।

কাউন্সিলর মঞ্জুর অভিযোগ করে বলেন, মেয়র আব্বাসের প্রতিমাসে অবৈধ আয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। এটি তিনি গর্ব করে বলে থাকেন। সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরও এ কথা বলেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। পৌরসভার কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩৬ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। ফান্ডে টাকা থাকার পরও মেয়র আব্বাস এই বেতন-ভাতা দেননি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শুক্রবার জেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় মেয়র আব্বাসকে জেলা কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতেও কেন্দ্রে সুপারিশ করা হয়েছে। এর আগে, গত বুধবার কাটাখালী পৌর কমিটির আহ্বায়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেয় পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ।

অন্যদিকে, ১২ কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাবে সম্মতির পর আব্বাস আলীর অপসারণ চেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি নেওয়ার পর রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিল জানান, এ সংক্রান্ত চিঠি তিনি পেয়েছেন। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন- মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ৩ মামলা, গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ

এদিকে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় মেয়র আব্বাস আলীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে ছাত্রলীগ। শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে উন্নয়নের অভিযাত্রায় রাজশাহী নামের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে মহানগর ছাত্রলীগ। এছাড়া রাজশাহীতে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে গণধোলাই দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

গত মঙ্গলবার থেকে রাজশাহীতে দু’টি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় উঠে আসেন আব্বাস আলী। ওই অডিওকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে আপত্তিকর কথা বলতে শোনা যায় তাকে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তিন কাউন্সিলর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নগরের তিন থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেন।

সারাবাংলা/টিআর

কাটাখালী কাটাখালী পৌর মেয়র কাটাখালীর মেয়র মেয়র আব্বাস মেয়র আব্বাস আলী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর