আয়কর দিবসে কর দিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান
৩০ নভেম্বর ২০২১ ০০:১২
জাতীয় আয়কর দিবস আজ মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর। মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, সবাই মিলে দেবো কর— এই স্লোগান নিয়ে দিবসটি সারাদেশে পালন করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বছর কর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কর প্রদানে করদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে মুজিববর্ষের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন’।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে ‘রূপকল্প বাস্তবায়ন ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আয়করের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগীয় শহরে আয়করের ভূমিকা তুলে ধরে সেমিনারের আয়োজন করা হবে।
কর দিবসের আলোচনায় করদাতা বিশেষ করে ব্যবসায়ী, আয়কর আইনজীবী, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের জাতীয় পর্যায়ের সেলিব্রেটি, আয়কর আইনজীবী, সংবাদকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর বিবরণী দাখিলের শেষ দিনও আজ।
জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তারা এই দিবসটির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। তারা করদাতাদের প্রতি সময়মতো কর দিতে আহ্বান জানান।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আয়কর কেবল রাজস্ব আহরণের প্রধান খাত নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি অন্যতম মাধ্যম। প্রত্যক্ষ কর বা আয়করকে পৃথিবীর সব উন্নত রাষ্ট্রের প্রধান কর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশ রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে সফলতার পথ ধরে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুখী-সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
আয়কর সম্পর্কে জনগণের মধ্যে পর্যাপ্ত সচেতনতা তৈরি করতে পারলে একদিকে যেমন কর বিষয়ক ভীতি দূর হয়, তেমনি সমাজে কর পরিপালনের সংস্কৃতিও বিকশিত হয় বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, আয়কর সম্পর্কে ভীতি ও অসচেতনতা দূর করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ বিগত বছরগুলোতে অনেক উদ্ভাবনীমূলক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব ইতিবাচক সংস্কার ও কার্যক্রমের ফলে আয়কর ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে রাজস্ববান্ধব সংস্কৃতি গড়ার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মসূচির ছোঁয়া জাতীয় পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। করদাতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের সব কর অফিসে একযোগে নভেম্বর মাসব্যাপী করসেবা দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার সামাজিক ন্যায়বিচার ও সমতা আনয়নের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে একটি সেবাধর্মী, জনবান্ধব ও করদাতাবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। ফলে করদাতারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর প্রদান করে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাজেট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অত্যাবশ্যক। করদাতাদের সার্বিক সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কেবল সে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। উৎসবমুখর পরিবেশে কর প্রদান, ওয়ান স্টপ সার্ভিস, তাৎক্ষণিক ই-টিআইএন প্রদান, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল, আয়কর রিটার্ন পূরণে সহায়তা ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে করদাতা ও সর্বসাধারণের সরাসরি সংযোগে দেশে আজ এক হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি যারা এ বছর সেরা করদাতার সম্মাননা পাচ্ছেন, তাদের অভিনন্দন জানান তারা। একইসঙ্গে দিবসটির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর