Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যেখানে সেখানে নয়, শিল্প খাতের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:২১

ঢাকা: দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে শিল্প খাতকে গুরুত্ব দিলেও কৃষি জমিকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে যেখানে সেখানে শিল্প কারখানা স্থাপনের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন তিনি। এ কারণেই সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ করছে বলেও তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র শিল্প কারখানা করা যাবে না। কারণ আমরা আমাদের কৃষিজমি রক্ষা করতে চাই। খাদ্যের চাহিদা কখনো কমবে না, বরং দিন দিন বাড়বে। কোভিড-১৯-এর কারণে এই চাহিদা আরও বেড়েছে। অনেক উন্নত দেশই খাদ্য সংকটে ভুগছে। আল্লাহর রহমতে আমাদের সেই সমস্যা নেই। কারণ করোনা সংক্রমণ দেখা দিলে আমরা যেকোনোভাবে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে আমি সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে শিল্প খাতকেও আমরা গুরুত্ব দেই। সে কারণেই সরকার বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে সারাদেশে একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীতে ৯ম জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সংযুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আট দিনব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন- জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা উদ্বোধন

শেখ হাসিনা বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন এরই মধ্যে সারাদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ১৭৭টি ক্লাস্টার চিহ্নিত করেছে। ক্লাস্টারসহ সারাদেশে রয়েছে ৭৮ লাখ এসএমই শিল্প প্রতিষ্ঠান। এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নতুন করে একজন মানুষের কাজের ব্যবস্থা হলেও কমপক্ষে ৭৮ লাখ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান তৈরি হতে পারে। সে কারণে এসএমই ক্লাস্টারের উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়াতে আমরা যথাসম্ভব সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বিসিক শিল্প নগরী গড়ে তুলেছিলেন। সেই শিল্প নগরীরও সম্প্রসারণ ঘটানো হচ্ছে। এরকম সুনির্দিষ্ট জায়গায় শিল্প গড়ে তুলতে হবে, যেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকে, পরিবেশ ঠিক থাকে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গড়ে তোলার সময়ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণের এই বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এসএমই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কেবল পণ্য উৎপাদন নয়, সেগুলোর মান বজায় রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে পৃথিবীর কোন দেশে কী চাহিদা আছে, সেই অনুযায়ী কোন কাঁচামাল সহজে পাওয়া যেতে পারে, কোন ধরনের শিল্প সহজে গড়ে তোলা যেতে পারে— এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদের শিল্প গড়ে তুলতে হবে। তাতে আমার নিজের দেশে যেমন বাজার সম্প্রসারণ হবে, নিজের বাজার তৈরি হবে, তেমনি এগুলো বিদেশেও রফতানি করতে পারি। এর জন্য কেবল পণ্য উৎপাদন নয়, পণ্যগুলো যেন আন্তর্জাতিক মানের হয় সেদিও বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।

প্রান্তিক পর্যায়ে নারীদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে সহযোগিতা করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জয়িতা ফাউন্ডেশনের জন্য আমরা জায়গা দিয়েছি। একেবারে গ্রামের তৃণমূলে পড়ে থাকা মেয়েরা উদ্যোক্তা হয়ে কিছু কাজ করে। তাদের জন্য আমরা ফাউন্ডেশন বিল্ডিং তৈরি করে দিচ্ছি। সেখানে পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা আছে। আমি মনে করি, আমাদের এসএমই ফাউন্ডেশন এ ধরনের একটা উদ্যোগ নিতে পারে। শুধু ঢাকায় নয়, বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে পারেন।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনেও পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ করা উচিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পণ্যগুলো বাজারজাত করার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে ফাউন্ডেশনও কার্যকর হবে আমি মনে করি। বিদেশিরাও কিন্তু এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। কাজেই এই মেলাটা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রসারিত হয়, সেই বিষয়টি দেখা উচিত। আমি আশা করি, ফাউন্ডেশনের একটি ওয়েবপেজ থাকবে যেখানে দেশের বাইরেও সবার কাছে আপনাদের পরিচিতি তুলে ধরতে পারেন। এসএমই সম্পর্কে মানুষের জানার সুযোগ যেন তৈরি হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যে দেশ আমাদের উপহার দিয়েছেন, আসুন, আমরা সবাই মিলে সেই দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি, বাঙালি জাতি হিসেবে আজকে আমরা উদ্যোক্তা হচ্ছি, আমাদের শিল্পায়ন হচ্ছে, আমাদের কৃষিতে উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি, অর্থনৈতিকভাবে আমরা স্বাবলম্বিতার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। সেই  সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।

এর আগে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২১ বিজয়ী চার উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান বক্তৃতা করেন।

২০২০ সালের মার্চ মাসে সবশেষ এসএমই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সেই মেলাটিও শেষ করা যায়নি। এরপর ১৯ মাসের বিরতিতে এসএমই ফাউন্ডেশন তাদের এই বার্ষিক আয়োজনটি শুরু করছে। আজ (রোববার) থেকে শুরু হয়ে মেলা চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

এসএমই খাত এসএমই পণ্যমেলা এসএমই ফাউন্ডেশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর