রাষ্ট্রবিরোধী গুজব সৃষ্টির পরিকল্পনা ছিল ৫ জনের: র্যাব
১০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:২২
ঢাকা: জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে রাজধানীর স্বামীবাগ এলাকায় একটি বাড়িতে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) অভিযানের পর পাঁচ শিবির নেতাকর্মীকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) তাদের গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।
র্যাবের দাবি— শিবিরের ওই পাঁচ নেতাকর্মী রাষ্ট্রবিরোধী অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। এরা হলেন মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (২৯), মো. ওয়ায়েজ কুরুনী (২৭), মো. তাওহীদুল ইসলাম (২৬), মো. গাজী সাখাওয়াত (২৯) ও মো. হাবিবুর রহমান (৩০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে অভিযানে জব্দ করা হয় ল্যাপটপ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক ও বিভিন্ন দেশবিরোধী, নাশকতা ও উসকানিমূলক লিফলেট। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত ও নাশকতায় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) র্যাবের কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত আলামত বিশ্লেষণ এবং জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, বর্তমান রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি ধারাকে বানচাল ও নস্যাৎ করার জন্য রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্ন সরকারের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র, সরকারের সম্পদ ও জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি, শান্তিপ্রিয় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।’
তারা অনলাইনে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বাইরে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অংশ হিসেবে তারা দেশের বাইরে বিভিন্ন সংস্থার কাছে কল্পিত এবং বানোয়াট তথ্য প্রেরণ করে বলে জানায়। বিগত সময়ের বিভিন্ন ইস্যু সাম্প্রতিক সময়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন’কে পুঁজি করে তারা অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার অপচেষ্টা করে। আন্দোলনকে উস্কে দিয়ে তারা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে অপচেষ্টা চালায়।
গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত। অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত এই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে তারা সংঘবদ্ধভাবে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছিল বলে জানায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহের বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপের মাধ্যমে তারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করত বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন নামে ক্লোজড গ্রুপ তৈরি করে যেখানে রাষ্ট্রবিরোধী গুজব সৃষ্টির পরিকল্পনা করে। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ও রাষ্ট্রের কার্যক্রম নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করে ভার্চুয়াল জগতে প্রচারের ব্যবস্থা করে থাকে। এ জাতীয় বিভিন্ন কন্টেন্ট ল্যাপটপে রক্ষিত রয়েছে। বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট এডিট করে তৈরি ও প্রচার করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা রাষ্ট্রবিরোধী সাইবার ফোর্স পরিধি বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ব্যানারে রিক্রুটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিভিন্ন ঘটনাকে কীভাবে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা যায়, এ সংক্রান্ত নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করা ও মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র করে থাকে।
গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও তাওহীদুল ইসলাম এর নামে বিভিন্ন থানায় রাষ্ট্রবিরোধী, নাশকতা, সন্ত্রাসবিরোধী এবং বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার ও নাশকতা ও উসকানিমূলক প্রচারণার কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/একে