জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসার অস্ত্রোপচার সোমবার
১১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৪২
ঢাকা: সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সোমবার অস্ত্রপচার হবে জোড়া শিশু লাবিবা লামিসার। যাদের বয়স বর্তমানে দুই বছর আট মাস।
লাবিবা-লামিসা নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপুর গ্রামের লাল মিয়া মনুফা দম্পতির সন্তান।
শনিবার (১১ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হলেজ হাসপাতালের সভাকক্ষে জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচার বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন চিকিৎসকরা।
জোড়া শিশুর অস্ত্রপচার বিষয়ে শিশু পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ-উল হক কাজল বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী। এই জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচারে আমরা সফল হবো।’
অধ্যাপক কাজল বলেন, ‘জোড়া শিশুর যখন ৯দিন বয়স তখন তারা রংপুর মেডিকেল থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসে। প্রায় দেড় মাস ভর্তি ছিল। এর মধ্যে তার পায়ুপথে অস্ত্রোপচার হয়। পেট দিয়ে মল ত্যাগের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের কারণে ওদের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয় নি। গত ২৮ অক্টোবর আবারও তাদেরকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
ডা. কাজল বলেন, ‘এর আগে জোড়া শিশু তোফা তহুরার অস্ত্রোপচার হয়। যেটিতে আমরা সাকসেস হই। এটিতেও আমরা সাকসেস হতে পারব বলে আশা করি। তাদের পায়ুপথে, প্রস্রাবের রাস্তা এবং পেছনের মেরুদণ্ডে সমস্যা আছে। দুইজনকে আলাদা করে তাদের পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপান্তর করা হবে। ইনশাল্লাহ আমরা সাকসেস হবো।’
ডা. কাজল বলেন, ‘সবকিছু ভালো থাকলে আগামী সোমবার তাদের অস্ত্রোপচার করব। এতে আমাদের সময় লাগবে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা।
এই জোড়া শিশুর অস্ত্রোপাচারে পেডিয়াট্রিক সার্জারি ছাড়াও নিউরো সার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, রেডিওলোজি, ইউরোলোজি, অর্থোপেডিকস সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরাও থাকবেন।
নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, ‘জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তবে সাবধানে এগুতে চাই।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা বলেন, ‘এর আগেও আমরা জোড়া শিশুর অস্ত্রোপচার করেছি। বিজয়ের মাসে আমরা বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ।’
জোড়া শিশুদের বিষয়ে মা মনুফা বেগম বলেন, ‘শিশু দুটিকে নিয়ে খুব সমস্যার ভেতরে থাকতে হয়। একজন হাঁটতে চাইলে, অন্যজন বসতে চায়। একজন খেতে চাইলে অন্যজন কাঁদে। একজন ঘুমাতে চাইলে তো অন্যজন চিৎকার করে। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। এদের সঙ্গে সবসময় থাকতে হয়।’
শিশুদের বাবা লাল মিয়া বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করি। করোনার সময় সব কাজ বন্ধ ছিল। অনেক কষ্টে দিন গেছে আমাদের। গ্রামে অনেকের সহায়তা পেয়েছি। অনেকেই টাকা আমাদের হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে ঢামেক হাসপাতালে এসে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। হাসপাতাল থেকে আমাদের সকল খরচ বহন করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বার্ন ও প্লাস্টিক সাজারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার, শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আব্দুল হানিফ টাবলু, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারির অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী, শিশু সার্জারির অধ্যাপক ডা. সাহনুর ইসলাম ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম।
সারাবাংলা/এসএসআর/একে