Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খাল খননে ঝুঁকিতে একাধিক স্থাপনা, হেলে পড়েছে ভবন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:৩৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় খাল সংলগ্ন একটি ভবন হেলে যাওয়ার পর খালপাড় ঘেঁষে গড়ে তোলা আরও কয়েকটি স্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খালটি সংস্কারের কাজ করছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যেই একটি ভবন হেলে পড়ে ও কয়েকটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে বাসিন্দারা ভবনগুলো ছাড়তে শুরু করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালের পাড় ঘেঁষে গড়ে তোলা ভবনগুলোর কোনো অনুমোদন নেই। অবৈধ ভবন থেকে লোকজন সরিয়ে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্য খালে সংস্কারকাজ শুরুর আগেই সিডিএ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু ভবন মালিকরা সেটা আমলে নেননি। এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিডিএ।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড সড়কে পার্বতী ফকিরপাড়া এলাকায় গুলজার খাল সংলগ্ন একটি তিনতলা ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিসের টিম।

চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর কুতুব উদ্দিন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, তিনতলা ভবনটি এক থেকে দেড় ফুট হেলে গেছে। রড ভেঙ্গে দেয়াল থেকে বেরিয়ে গেছে। সেখানে বসবাসরত ৬টি পরিবারের ৭০ থেকে ৮০ জন লোককে রাতেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই ভবনের পাশে একটি দোতলা মন্দির এবং একটি সেমিপাকা কলোনির দেওয়ালে ও মেঝেতে ফাটল পাওয়া গেছে। একই সারিতে আরও অন্তঃত তিনটি ভবন, একটি পাকা মন্দির এবং ১০টি কাঁচা ঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

তিনি বলেন, ভবনসহ স্থাপনাগুলো একেবারে গুলজার খালের পাড় ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে। গুলজার খালের খননকাজ শুরু হয়েছে। খাল থেকে মাটি তুলে ফেলায় ভিত দুর্বল হয়ে ভবনগুলো হেলে পড়তে শুরু করেছে। তবে লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। খালের সংস্কারকাজ অব্যাহত আছে।

স্থানীয় সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে রাতে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ওই ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিই। কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বাকিদের সরে যেতে বলা হয়েছে। অনেকে চলে গেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উনারা ব্যবস্থা নেবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু করার সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল শাহ আলী সারাবাংলাকে বলেন, যে তিনতলা ভবনটি হেলে পড়েছে, এর কিছু অংশ ২০১৯ সালে প্রকল্পের কাজ শুরুর পর উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তখনই বলা হয়েছিল, মালিকপক্ষ যেন বাসিন্দাদের সরিয়ে ভবনটি অপসারণ করে। কারণ এর ভিত্তি খুব দুর্বল। খাল থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ শুরু হলে ভবনটি টিকবে না। তারা কথা শোনেনি। এখন খাল খননের কাজ শুরুর পর স্বাভাবিকভাবেই সেটি হেলে পড়েছে।’

গুলজার খাল সংলগ্ন আরও ৫-৬টি স্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খালের দেওয়াল আর ভবনগুলোর দেওয়াল প্রায় একসঙ্গে। এভাবে খাল ঘেঁষে স্থাপনা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। ভবনগুলো নির্মাণে সিডিএর কোনো অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। এখন সিডিএ সেগুলো লাল তালিকাভুক্ত করে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

তবে ভবন মালিকরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, সিডিএ কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে তাদের ভবন থেকে সরে যেতে বলেছিল। এ বিষয়ে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। দুই বছর আগে কিছুদিন খালে কাজ করেছিল। এরপর চলে যায়। দুইমাস আগে আবারও কাজ শুরু করলেও তাদের কিছু জানানো হয়নি।

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

হেলে পড়েছে ভবন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর